Main Menu

একতরফা নির্বাচনের সমালোচনায় মুখর বিশ্বমিডিয়া

+100%-

ঢাকা: একতরফা দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কড়া সমালোচনা করেছে বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যমগুলো। বিরোধীদলবিহীন এ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এবং চলমান অস্থিরতাকে বাড়িয়ে তা গভীর সংকটের তৈরি করবে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবধরনের বাধা নিষেধকে কোন পাত্তা না দিয়েই প্রহসনের এ নির্বাচন করছে সরকার। শনিবার বিশ্বের প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম বিবিসি, আল-জাজিরা, দি নিউইয়র্ক টাইমস, রয়টার্স, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য টেলিগ্রাফ এর প্রতিবেদগুলোতে এ সমালোচনা উঠে আসে।

‘ভায়োলেন্স এস বাংলাদেশ পোল লুমস’ শীর্ষক বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবার বাংলাদেশের বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই ৩০ টি ভোটকেন্দ্র আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রধান বিরোধীদল এ নির্বাচনকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে ২ দিনের হরতালের ডাক দিয়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহে নির্বাচন নিয়ে সহিংসতায় অন্তঃত ১০০ লোক নিহত হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিরোধীদল চাইছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। কিন্তু বর্তমান সরকার তাদের সে দাবি প্রত্যাখান করেছে।

‘বাংলাদেশ হিট বাই জেনারেল স্টাইক অন পুল ইবে’ শিরোনামে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নির্বাচন প্রতিরোধে টানা ৪৮ ঘন্টা হরতালের ডাক দিয়েছে বিরোধীদল। দলটির প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকার। নির্বাচনকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রহসন’ আখ্যা দিয়ে দেশের ভোটারদের তা বর্জনের ডাক দিয়েছেন তিনি।

বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার বাসার সামনে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, জলকামান রাখা হয়েছে এবং বিরোধীদলের নেতা-কর্মীকে সেখানে প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনে গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় পর্যবেক্ষক পাঠাচ্ছেনা যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ। তত্ত্বাবধায়কের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপিসহ ২০টি দল নির্বাচন বয়কট করেছে।

‘বাংলাদেশ ভোট আনলাইকলি টু স্টেম ওয়েব অব ভায়োলেন্স’ শিরোনামে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজপথে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে আর সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক সংঘাত। এ নির্বাচন দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটিকে গভীরতর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন বৈধতা পাবেনা দাবি করে এটি বয়কট করেছে দেশটির বিরোধীদল ও তার মিত্ররা। ধারণা করে হচ্ছে এ ধরনের নির্বাচন রাজনৈতিক সহিংসতাকে অধিক বাড়িয়ে দিবে। ২০১৩ সালের মধ্যেই রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তঃত ২৭৫ জন লোক নিহত হয়েছে।

‘রিনিউড ভায়োলেন্স ইন বাংলাদেশ এহেড অব ডিসপুটেড ইলেকশন’ শিরোনামে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের রবিবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা নতুন মাত্রায় রুপ নিতে যাচ্ছে। বিরোধীদল এ নির্বাচন বয়কট করার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিশাল জয় পেয়ে যাচ্ছে শাসকদল আওয়ামীলীগ। নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ দাবি করে শনিবার সকাল থেকেই ৪৮ ঘন্টা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। এর পাশাপাশি দেশটিতে অবরোধও চলছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানীখাতের প্রধান ক্রেতা ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটিশ অধিভুক্ত ৫৩ টি দেশের সংস্থা কমনওয়েলথ ও যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত বিরোধীদলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন নিপীড়ন বন্ধ করা। এবং স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।

‘বাংলাদেশ ইলেকশনস: টেনশনস হাই ইন ফেইস অব ওপোজিশন বয়কট’ শিরোনামে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করায় নির্বাচন বয়কট করেছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। আর বিরোধীদল এ নির্বাচনে অংশ নেয়ার ফলাফল হচ্ছে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই জয় পাচ্ছে শাসকদল আওয়ামীলীগ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলো এ নির্বাচনকে প্রহসন বলে উল্লেখ করেছে।‘রিনিউড ভায়োলেন্স ইন বাংলাদেশ এহেড অব ডিসপুটেড ইলেকশন’ শিরোনামে দ্য টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়, রবিবারের নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা বেড়েই যাচ্ছে। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে সহিংসতায় অন্তঃত ১৫০ জন লোকের প্রাণহানি ঘটেছে। বিশ্লেষকরা আশংকা করছেন, নির্বাচনের এ সংঘাত বাংলাদেশকে একাত্তরের মতোই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

এতে বলা হয়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে সহিংসতা নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে আরো ২ জন। বিরোধীদল এ নির্বাচনকে প্রহসনমূলক বলে উল্লেখ করে ৪৮ ঘন্টা হরতালের ডাক দিয়েছে। ইতিমধ্যে অর্ধশত ভোট কেন্দ্র আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনকে প্রহসনমূলক বলে তা দেশবাসীকে পুরোপুরি বর্জনের ডাক দিয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দাবি করেছেন সরকার তাকে গৃহবন্দি করে রেখেছে।






Shares