Main Menu

ভারতে প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশের নির্বাচন

+100%-

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনের ফলাফল ভারতকেও প্রভাবিত করবে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দ্য ইকনমিক টাইমস। বুধবার পত্রিকাটিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের নির্বাচন এবং বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির শাসন ক্ষমতায় কে বসবে এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো এশিয়ার অন্যতম নবীন এই দেশটি তার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমুর্তি ধরে রাখতে পারবে কিনা। এরইমধ্যে জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ক্ষমতাসীন জোটের ১৫৪ জন সদস্যই কোনো বিরোধীতা ছাড়া নির্বাচিত হয়েছেন। তাই আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বাকি ১৪৬ আসনে মূলত একটি আনুষ্ঠানিকতাই হবে।      

এক্ষেত্রে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিরোধী দল বিএনপির ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার বিএনপি ও তার সহযোগী জামায়াতের যে কোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।

এ বিষয়ে পত্রিকাটিকে দেয়া এক বক্তব্যে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘এটা যেন ১৯৭১ সালের পুনরাবৃত্তি যখন ক্ষমতাসীন শক্তি বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য শুরু হওয়া স্বাধীনতা আন্দোলন সব রকম উপায়ে দমনের চেষ্টা করেছিল। সেই পরাজিত শক্তি আবার দেশের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয় মুছে ফেলতে এক হয়েছে। এটি এখন আর নির্বাচনের ব্যপারে নেই। এটি এখন স্বাধীনতার স্বপক্ষ এবং বিপক্ষ শক্তির মধ্যে শেষ যুদ্ধ। এই কিছুদিন ধরে যা ঘটছে তা ১৯৭১ সালের অসমাপ্ত কাজ যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি।’

আসাদুজ্জামান নূর এমন এক সময়ে এ কথা বল্লেন যখন গত ১৪ ডিসেম্বর নীলফামারীতে নিজ নির্বাচনী এলাকায় যাবার পথে তার গাড়িবহরে জামায়াত-শিবির সমর্থকরা হামলা চালায়। ওই হামলায় ৫ জন নিহত হলেও আসাদুজ্জামান নূর নিরাপদে বের হয়ে যেতে সক্ষম হন। এভাবে গত ২০ দিনে বাংলাদেশে কমপক্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।

তবে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার অভিযোগ এই সরকারের অধিনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠ হবে না। বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে। বিএনপি নেতারা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টিকে ‘হঠকারিতা এবং জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’ বলেও উল্লেখ করেছেন।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সমশের মবিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আর বাকিরা আন্ডারগ্রাউন্ডে রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উদ্ভট অভিযোগ আরোপ করা হয়েছে। পুরো সিস্টেমটাকেই নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে সরকার এবং এই নির্বাচন প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়।  

যদিও ভারত বহুদিন থেকেই জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাস ও জঙ্গি সংশ্লিস্টতা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। তবে বিএনপি ক্ষমতায় এলে সন্ত্রাসবাদকে নিরুৎসাহিত এবং সন্ত্রাসীদের ভারতের সীমান্তে ঠেলে না দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমশের মবিন বলেন, ‘জামায়াত আমাদের জন্যও দুশ্চিন্তার বিষয়। তাদের সঙ্গে আমাদের শুধু নির্বাচনী সমঝোতাই আছে কারণ তারা দেশের মোট ভোটের ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের সঙ্গে আমাদের আদর্শগত মিল নেই। যদি বিএনপি ক্ষমতায় আসে তাহলেও যুদ্ধাপরাধের বিচার চলবে তবে তা হবে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায়।’ আজকের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ১০৮০ সালে এবং ১৯৯৫-৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তবে গত মঙ্গলবারই আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও প্রেসিডেয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ শেষ হয়ে গেছে। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং এ সংক্রান্ত কাজ অনেক দূর এগিয়ে গেছে।’