Main Menu

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তিতে সমর্থন দেবে না বিজেপি

+100%-
ঢাকা : বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের লক্ষ্যে ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিলে সমর্থন দেবে না দেশটির প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। বিজেপির সঙ্গে আলোচনা না করেই বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিটি করায় তারা এতে সমর্থন দেবে না। তাই ভারতীয় পার্লামেন্টের চলতি বর্ষাকালীন অধিবেশনে চুক্তিটির অনুমোদনের কোনো সম্ভাবনা নেই।

বিজেপির নেতা ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা মঙ্গলবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তার দলের এই অবস্থানের কথা জানান। বুধবার ভারতের প্রভাবশালী হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজেপির এই স্পষ্ট অবস্থান ভারতের প্রতি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য একটি বড় ধরনের কূটনৈতিক ব্যর্থতা বলে মনে করা হচ্ছে। সমালোচকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে ট্রানজিটসহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে গেলেও বিনিময়ে তেমন কিছুই আদায় করতে পারেনি।

সম্প্রতি দিল্লি সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভারতীয় পার্লামেন্টের প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা অরুণ জেটলির কাছে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে বিজেপির সহযোগিতা চান। তখন অরুণ জেটলি দীপু মনিকে বলেছিলেন, দলের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানাবেন। গতকাল যশবন্ত সিনহার বক্তব্যে বিজেপির অবস্থান পরিষ্কার হলো।

গত ২৫ থেকে ২৭ জুলাই দিল্লিতে দীপু মনির ওই সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদ সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের বিলটি পার্লামেন্টে উত্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্লা গত সোমবারও বলেছিলেন, ‘স্থলসীমান্ত চুক্তির বিলটি পাস করানোর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রাখার চেষ্টা করব। এজন্য বিজেপির সহযোগিতা প্রয়োজন। সেই সহযোগিতা না পেলে আমাদের চেষ্টা হবে রাজ্যসভায় বিলটি অন্তত উত্থাপন করা, যা গত অধিবেশনে চেষ্টা সত্ত্বেও সম্ভব হয়নি।’

কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার শুরু হওয়া দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট ভারতের পার্লামেন্টের (রাজ্যসভা ও লোকসভা) চলতি অধিবেশনে সরকার ৪৪টি বিল পাস করাতে আগ্রহী। ওই তালিকায় ৪ নম্বরে (রাজ্যসভা) আছে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদন বিল।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গতকাল যশবন্ত সিনহা বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন বিল পাস করানোর প্রক্রিয়াটা কী, তা প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত। এজন্য পার্লামেন্টে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন। আমাদের সাহায্য ছাড়া এটি হবে না। চুক্তিটি সইয়ের আগে প্রধানমন্ত্রীর বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তা না করে তিনি এখন সমর্থন চাইছেন। আমরা তা কিছুতেই হতে দিতে পারি না।’

ঝাড়খণ্ড থেকে নির্বাচিত বিজেপির লোকসভার এই সদস্য খুব স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, চুক্তিটি সইয়ের পর এভাবে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় তারা সমর্থন দেবেন না।

জানা গেছে, চুক্তিটির ব্যাপারে আসামের বিজেপি নেতাদের প্রবল আপত্তি রয়েছে। তাই আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

ভারতের পার্লামেন্টের বর্ষা অধিবেশন শুরু হয়েছে গত সোমবার। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী এই অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ১৬ দিন। স্বাভাবিকভাবেই স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের বিল সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। রাজ্যসভায় যে তালিকা প্রস্তুত হয়েছে, তাতে বিলটির ক্রমিক সংখ্যা ৪ এবং লোকসভায় ক্রমিক সংখ্যা ১৫।

পার্লামেন্ট অধিবেশনের সাম্প্রতিক যা হাল, তাতে গত বাজেট অধিবেশনে ৩৫টির মধ্যে দুটি মাত্র বিল পাস করা সম্ভব হয়েছিল। এর আগে গত শীতের অধিবেশনে ২৫টির মধ্যে পাস হয়েছিল মাত্র ছয়টি বিল।






Shares