Main Menu

নবীনগরে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পাঁচ নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি 

+100%-
মিঠু সূত্রধর পলাশ, নবীনগর প্রতিনিধি  :: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে উপজেলা যুবলীগের একটি মিছিল থেকে মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় হেফাজতে ইসলাম ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ফেসবুকে বাকযুদ্ধের পর এবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের পাঁচ নেতাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। ‘নবীনগর তৌহিদী জনতা’র নামে ওই পাঁচ নেতার মুঠোফোনে গতকাল এসএমএস পাঠিয়ে ওই হুমকি দেওয়া হয়।
হুমকির পর পরই এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে যুবলীগের পক্ষে নবীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
হুমকির ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়াসহ এটি এখন ‘টক অব দ্যা নবীনগর’ এ পরিণত হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণে বাধা প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা যুবলীগ সদরে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। যুবলীগের ওই মিছিল থেকে জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ‘নবীনগরে মৌলবাদীদের ঠাঁই নেই’ বলে স্লোগান দেয় যুবলীগ নেতাকর্মীরা।
এ অবস্থায় শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) ‘নবীনগর তৌহিদী জনতা’র নামে স্থানীয় পাঁচজন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ০১৩০৪-০৮৩২৩৭ নম্বর থেকে আলাদা আলাদাভাবে এসএসএস এর মাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।
মুঠোফোনে দেওয়া ওই এসএমএসটিতে লেখা হয়, ‘ইসলাম আর নবীজীর বিরুদ্ধে অবস্থান করার জন্য তোমাকে সতর্ক করা হলো। এরপরও ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কিছু যদি পাই, তাহলে তোমাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
নবীনগর তৌহিদী জনতা’।
হুমকিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন- নবীনগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক আহবায়ক ও সাবেক ভিপি বশির আহমেদ সরকার পলাশ, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সামস আলম, সহ সভাপতি শেখ হাফিজুর রহমান, সহ সম্পাদক কাজী শরীফ ও যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমীর হোসাইন।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রিপন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমাদের এমপিসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অনেকের রহস্যজনক নীরবতার কারণেই যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগকে একের পর এক এসব হুমকি দেওয়ার দুঃসাহস দেখাতে পারছে মৌলবাদীরা। তবে আমরা ইতিমধ্যে  থানায় জিডি করাসহ বিষয়টি জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে অবগত করেছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ফেসবুকে যুবলীগকে দেওয়া হুমকি দেখে আমরা স্তম্ভিত হয়েছি। এরপর আবার তৌহিদী জনতার নামে প্রাণনাশের হুমকি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাই আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ব্যর্থ হলে গোটা জেলায় এর প্রতিবাদে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নবীনগর হেফাজতে ইসলামীর সহসভাপতি মাওলানা মেহেদী হাসান বলেন, ‘ নবীনগর তৌহিদী জনতার নামে পাঁচ নেতাকে যে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে, তার জন্য আমরাও এর তীব্র নিন্দা জানিয়ে হুমকিদাতাদেরকে দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। মূলত: তৃতীয় কোনো পক্ষ যুবলীগের সঙ্গে হেফাজতের সম্পর্কের অবনতি ঘটাতেই এসব অপকর্ম করছে বলে আমরা মনে করছি।
নবীনগর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মকবুল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি অতীব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। যেই ফোন নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেটি ঢাকায় এক্সপার্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই হুমকিদাতাদের চিহ্নিত করা যাবে।’





Shares