Main Menu

নবীনগরে ড্রেজারে বালি ফেলে ৩টি সেতু অকেজো করে সরকারি খাস ভূমি বিক্রয়ের অভিযোগ

+100%-

মিঠু সূত্রধর পলাশ,নবীনগর(ব্রাহ্মণবাড়িয়া)প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার পশ্চিম ইউনিয়নে নবীপুর গ্রামে তিনটি সেতুর নীচের অংশ বালি দিয়ে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এতে করে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে নবীপুর ও লাপাং গ্রামে প্রতিনিয়ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ পোহায় এলাকার মানুষ।
অভিযোগ উঠেছে, এলাকার স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার ভাই ভরাটের কাজে জড়িত। এমনকি সেতুর নীচের পাশাপাশি আশেপাশের জায়গা ভরাট করে বিক্রিও করে দিচ্ছেন। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে ইতিমধ্যেই দু’টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ পত্রে বলা হয়, উপজেলার নবীপুর মৌজায় সরকারি খাস খতিয়ান অন্তর্ভুক্ত ১৪২৩,১৪২৭,১৬৭৫ সরকারি খাস ভূমির মোট ৫১ শতাংশ বালি দিয়ে ভরাট করে কিছু অংশ বিক্রয় ও কিছু অংশ বসতবাড়ি,কিছু অংশ মাছ চাষ করে অবৈধ দখলের অভিযোগ উঠেছে।

পশ্চিম ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শরিফ ও ৫নং ওয়ার্ড নবীপুর গ্রামে কৃষক মো: দারু মিয়া।
গত রবিবার (১৯/১১) বিকালের দিকে লাপাং ও নবীপুর গ্রামের প্রায় ২৮৬ জন এলাকাবাসী’র স্ব-স্বাক্ষরিত দু’টি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট দাখির করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও তার ছোট ভাই আবু কাউছার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, এটি একটি প্রতি হিংসা মূলক অভিযোগ। আমরা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি। তাই আইনকে শ্রদ্ধা করি, এই জায়গা ভরাটের বিষয়ে আমরা কিছুই জাননি না। প্রয়াত সাবেক সাংসদ এড. আব্দুল লতিফ ভাইয়ের আমলে এই জায়গা এলাকাবাসী ভরাট করে।আর এই জায়গা ভরাট করে বিক্রয়ের প্রশ্নই আসে না।

অভিযোগকারী শরিফ ও কৃষক দারু মিয়া জানান, ১৪২৩,১৪২৭,১৬৭৫ হাল দাগের সরকারি খাস ভূমি বালু দ্বারা ভরাট করে জনগনের চলাচলের জন্য নির্মিত তিনটি ব্রীজ সম্পুন্ন অকেজো করে মোট ৫১ শতাংশ নবীপুর মৌজার খাস ভূমি কিছু অংশ বিক্রয়,বাকি অংশ অবৈধ ভাবে দখল করে জন চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসী স্বার্থে প্রশাসন ও মাননীয় এমপি মহোদয়ের সহায়তা কামনা করছি।

উক্ত বিষয়ে ইউপি চেয়াম্যান মো: ফিরুজ মিয়া বলেন, এলাকাবাসীর দু’টি অভিযোগের কথা শুনেছি এবং সরজমিনে গিয়ে দেখেছি। আমার ইউপি আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন ও তার ভাই গ্রামের সহজ-সরল মানুষকে প্রতারনা করে ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ১নং সরকারের খাস খতিয়ান ভূক্ত খাল ভরাট করে কিছু অংশ বিক্রয় ও এলাকার তিন টি ব্রীজ অকেজো করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে এলাকার চিনা বিলের কৃষকদের ফসল ফলানো সম্পূর্ন নষ্ট করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে এলাবাসীর পক্ষে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় এমপি মহোদয়কে জানানো হবে।

৬নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি মেম্বার মামুন আশ্রাফ,৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার খলিল মিয়া,ইউপি ছাত্রলীগ সভাপতি আশ্রাফুল আলম,মুক্তিযোদ্ধা বারেক,মুক্তিযোদ্ধা আবু সায়েদ,হাজী খাজা মাঈন উদ্দিন,স্থানিয় সরদার কুদ্দুস মিয়া,মাওলানা নজরুল ইসলাম,স্বাধীন,অহিদ মিয়া,দানেশ মেম্বার, পশ্চিম ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: আলী হোসেন জানান, ১৪২৩,১৬৭৫,১৪২৭ সরকারি খাস ভূমির অবৈধ দখল ও বিক্রয়ের ফলে,যার সন্নিকটে বর্তমানে বাজার,হাইস্কুল,প্রাইমারী স্কুল,মাদ্রাসা,সরকারি হাসপাতাল সহ জনগণের বিভিন্ন সেবা মূলক স্থায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়াও তফসিল ভূমির পাশে বহু রায়তি সত্বের ঘর-বাড়ি সহ¯্রাধিক মানুষ স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছে। একসময় এই খাস ভূমি উপর দিয়ে প্রতিষ্ঠান ও আশ-পাশের বাড়ি-ঘরের পানি নিষ্কাশন সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে বড় মাপের নৌকা চলাচলের সুযোগ সুবিধা ছিলো। যা বর্তমানে একেবারেই দখল করে ফেলেছে।
তারা আরো জানান,অভিযুক্ত আনোয়ার ও তার ভাই কাউছারে বিরুদ্ধে থানায় খুন,ধর্ষণ ও লুটতরাজ সহ একাধিক মামলা চলমান রয়েছে। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালেহীন তানভীর গাজী বলেন,অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এর বাইরে কিছু জানতে চাইলে এসি ল্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করুন।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো: আশফাকুর রহমান বলেন,অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে গিয়েছি। ভরাট হয়েছে এটা সত্য। স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। আমাদের রেকর্ডে ওই দাগের জায়গা গুলি শ্রেণি গোপাট হিসেবে দেখা যাচ্ছে।যাহা সরকারের খাস ভূমি। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।






Shares