Main Menu

আছেন প্রধান শিক্ষক, তবুও স্কুল চালান অফিস সহকারি, দিচ্ছেন বেতন-ভাতা

+100%-

মিঠু সূত্রধর পলাশ : জেলার নবীনগর উপজেলার রতনপুর ইউনিয়নের রতনপুর আব্দুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন শাকিল এবং বিদায়ী প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার আলেয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ভাপরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকলেও স্কুল চালাচ্ছে অফিস সহকারি। সোমবার(১১/১২)সন্ধ্যায় বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাজী মেহেদী হাসান ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশারফ উল্লাহ স্থানীয় ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের সামনে এ অভিযোগ তুলেন।

বিষয়টি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বরাবরে লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার আলেয়া গত ৭ অক্টোবর এই স্কুল ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। ৮ অক্টোবর মেনেজিং কমিটির সিদ্বান্ত মোতাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী মোশারফ উল্লাহ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বিদায় প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি যোগসাজসে অসৎ উদ্যোশে টাকা আৎসাৎতের অভিপ্রায়ে হিসাব পত্রসহ কোন কিছুই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে বুঝিয়ে দিয়ে যাননি। সভাপতির নির্দেশক্রমে স্কুলের অফিস সহকারি মোঃ আশরাফ বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ পরিচালনা করছেন।
গত দুই মাস যাবত স্কুলের সকল অর্থ আয় অফিস সহাকরী মোঃ আশরাফ তার হাতে রেখে দিয়েছেন।
স্কুলের ব্যাংক একউন্টে কোন প্রকার টাকা জমা করেননি।

এ ব্যাপারে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশারফ উল্লাহ্ বলেন, ম্যানেজিং কমিটি আমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পর বিদায়ী প্রধান শিক্ষক আমাকে অফিসের চাবি,আয় ব্যায়ের হিসাব,রেজুরেশন বহি এবং বিদ্যালয়ের ইআইআইএন নম্বর যুক্ত মিসটিও আমাকে দিয়ে যায়নি। আমি সভাপতিকে বিষয়টি বারবার অবগত করেও কোন ফলাফল পায়নি, তিনি অফিস সহকারিকে দিয়ে শিক্ষকদের বেতনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ বিষয়ে গত ১০ ডিসেম্বর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটি সদস্য কাজী মেহেদী হাসান বলেন,স্কুলের টাকা কারোর হাতে রাখার কোন বিধান নেই।গত দুই মাস যাবত ব্যাংকে কোন টাকা জমা হচ্ছে না। কোন অসৎ উদ্যোশে আত্মসাৎতের অভিপ্রায়ে হয়ত ব্যাংকে জমা করা বা ব্যাংকে জমা করার ব্যবস্থা করছে না। সুষ্ঠু তদন্তের দাবী করছি।

এ ব্যাপারে অফিস সহকারি মোঃ আশরাফ জানান, ব্যাংকে টাকা জমা হয় না এটা একেবারেই ঠিক নয়।,সভাপতি বলেছেন যেহেতু প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি তাই এখন জমা না দিয়ে কিছু টাকা হাতে রেখে কাজ চালানোর জন্য। আমি একলক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা প্রায় একমাস আমার হাতে রেখে ছিলাম,স্কুল সভাপতির নির্দেশক্রমে।

এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটি সদস্য সালেহা বেগমকে ফোন করলে তিনি অসুস্থ থাকায় তার ছেলে হাবিবুল্লাহ মা’র বরাত দিয়ে বলেন,এই স্কুলে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে, সভাপতি তার ইচ্ছেমত স্কুল পরিচালনা করছেন,এখানে অন্যান্য সদস্যদের কোন মতামত নেন না।

এ ব্যাপারে বিদায়ী প্রধান শিক্ষক তানজিনা আক্তার আলেয়া তার বিরুদ্ধে অভিযোগটি মিথ্যা ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলেন,কোন যোগসাজস নেই, নিয়ম মাফিক ওই দিন ম্যানেজিং মিটিং আমি সব কিছুই উনাকে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছি,তিনি রাগান্বিত হয়ে বুঝে নিবেন না বলে চলে গেলেন,মিটিং-এ সভাপতি ছাড়া সবাই উপস্থিত ছিলেন,তাদের সকলের মতামতের ভিত্তিতে অফিস সহকারির কাছে সব কছিু বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি। সিম কাডটি ভুলে দেওয়া হয়নি,এটা পাঠিয়ে দিব।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন শাকিল এর সাথে তার এই ০১৭১২০৯২৮৮৮ মোবাইল নাম্বারে বারবার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অভিযোগটির প্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন,এটা অনৈতিক কাজ,হাতে স্কুলের টাকা রাখার কোন বিধান নেই,বিষয়টি নবীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকারম হোসেনকে তদন্ত করে রির্পোট প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।