Main Menu

সৌদিআরব এ গ্রেফতার পরবর্তী পদক্ষেপ

+100%-

12573793_1099462570078162_584756578917895083_n

বিল্লাল হোসেন সৌদিআরব : প্রবাসী বন্ধুরা,আমরা যারা সৌদিআরবে আছি তারা সবাই এখানকার নিয়মনীতি তথা আভ্যন্তরিন আইন ব্যবস্থা সম্পর্কে মোটামোটি জ্ঞাত আছি।মাদক সেবন,নামায না পরা,জুয়া খেলা,অবৈধ কাজ,মারামারি করা এগুলো এখানকার নিত্যদিনের অপরাধ,যা দূর্ভাগ্যক্রমে প্রতিনিয়ত ঘটে আসছে। তবে কিছু কিছু প্রবাসী বাংলাদেশী ভাইয়েরা সম্পূর্ন বিনা কারনে গ্রেপ্তার তথা জেল-জরিমানার সম্মুখিনও হচ্ছেন শুধুমাত্র ভাষা বলতে বা বুঝতে না পারার অপারগতার জন্যে। আজ আমরা “গ্রেপ্তার পরবর্তী পদক্ষেপ” নিয়ে আপনাদের জানাবো।আশা করি এতে যদি আপনাদের বিন্দু পরিমানও সাহায্য হয় তাহলে নিজেদের গর্বিত মনে করব।

“যদি কোন অপরাধ না করে ভূলবশত পুলিশ দ্বারা আটক হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার করনীয়”

•পুলিশকে গুছিয়ে বলুন যেন আপনার কনস্যালুট/এম্বাসীকে আপনার গ্রেপ্তারের ব্যাপারটি অভিহিত করা হয়।সৌদি আরবের আইনানুসারে এটা আপনার মৌলিক অধিকার যে আপনার বিরুদ্ধে তদন্তের সময় নিজস্ব এ্যাম্বাসীর লোক তথা কফিল/কোম্পানীর উকিল বা মুয়াগ্গীব উপস্থিত থাকবেন।

•প্রত্যেক প্রবাসী ভাইয়েরা দয়া করে নিজ কনস্যলুটের নাম্বার বা কফিল/কোম্পানীর উকিলের মোবাইল নাম্বার নিজ মোবাইলে সেভ করে নিশ্চিন্ত হবেন না।কারন এরকম অনেক সময় দেখা যায় পুলিশ মোবাইল সিস করে।সেক্ষেত্রে ছোট কোন নোটবুকে এজাতীয় গুরুত্বপূর্ন নাম্বারগুলো লিখে সবসময় নিজের কাছে রাখবেন।

•আপনি যদি দেখেন আপনার পরিচিত কাউকে ধরা হয়েছে তাহলে দয়া করে চুপচাপ দাড়িয়ে না থেকে যতদ্রুত সম্ভব সেই প্রবাসীর কর্মস্থলের লোকদের বিষয়টি জানান এবং এ্যাম্বাসীতেও যোগাযোগ করে জানান।যদি আপনি শতভাগ সিওর হোন যে লোকটি নির্দোষ তাহলে সরাসরি গিয়ে ভদ্রভাবে পুলিশকে বলুন। এতে অবহেলিত প্রবাসী ভাইটি আপনাকে সাক্ষী হিসেবে পাবে।আর আপনার সাক্ষই পারে একজনের রিজিক বাঁচাতে।

•কোন ক্রমেই আপনি মেজাজ খারাপ করবেন না বা উঁচু আওয়াজ করে পুলিশের সাথে কথা বলতে বা কোনরূপ তর্কে যাবেন না।

•থানায় নিয়ে যাওয়ার পর কোনকিছু না বুঝে কোন কাগজে সই করবেন না।মাথাও নাড়াবেন না। আগে ব্যাপারটি ভালমত বুঝবেন যে আপনার বিরুদ্ধের অভিযোগটি কি।যদি আরবী না বুঝেন তাহলে বার বার একই কথা বলবেন যে আমি আরবী জানিনা এবং আমি চাই আমার কফিল/উকিল এসে তোমাদের সাথে কথা বলবে আর ওরা বললেই আমি সাইন করবো। মনে রাখবেন, যতক্ষন না পর্যন্ত আপনি সই না করছেন বা সম্মতি না দিচ্ছেন ততক্ষন পর্যন্ত প্রশাসন আপনার অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারবেনা।ধমক দিবে কিন্তু বিচলিত হবেন না। আর আপনার গায়ে যদি হাত তোলে তাহলে সেই পুলিশের বিরুদ্ধেও আপনি মামলা করতে পারবেন।

•সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী, আপনি যদি কোন অপরাধ না করে থাকেন চাহলে কোন ক্রমেই আপনাকে গ্রেপ্তার বা নাযেহাল করতে পারবেনা প্রশাসনের কেউ। তবে আইনপ্রয়গের নিশ্চিয়তার জন্য অনুসন্ধান করার অনুমতি আছে।(আকামা চেক করা বা একই কফিলের কাজ করে কিনা অথবা অবৈধ বসবাসকারী চিন্হিত করন।)

•একটি ভুল স্বীকারক্তিই যথেষ্ট আপনার জেল-জরিমানা হওয়ার জন্য।সেজন্য কি বলছেন বা সম্মতি দিচ্ছেন সেদিকে ভালভাবে লক্ষ্য রাখবেন।

•যত চাপ প্রয়োগ করুক না কেন,কোন আরবী লিখা কাগজে বা সাদা কাগজে দস্তখত করূেন না।

•যদি অপরাধ আপনার দ্বারা সংগঠিত না হয়ে থাকে তাহলে কোনক্রমেই সেই অপরাধে নিজেকে স্বীকার করবেন না।অনেকে পরিস্থিতি থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য তারাতারি উপসংহারে চলে আসতে চায়,তাদেরকে বলছি,আপনি ভয় পেয়ে অপরাধ যদি এই আশায় কবুল করেন যে পরে কফিল বা উকিল এসে আপনাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবে,তবে সে ধারনা ভূল। আপনি নিরপরাধ হলে কেন আপনি অপরাধ কবুল করবেন ? সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশী প্রবাসীরা একারনেই ধৃত হয়ে জেল-জরিমানার সম্মুখীন হয়।

•তদন্তের সময় যখন কফিল/উকিল সামনে থাকবে তখন যে প্রশ্ন করা হয় শুধুমাত্র সেটারই উত্তর দেবেন।আগ বাড়িয়ে বেশী কথা বলতে যাবেন না।এমনও হতে পারে আপনার অতি কৌতুহলের কারনবশত অন্য কেউ ফেঁসে যেতে পারে।

•যারা একই কোম্পানী/কফিলের লোক না কিন্তু একই মেসে/রুমে থাকেন তারা দয়া করে একজন আরেকজনের কফিলের/উকিলের অথবা নিকট আত্মীয়র মোবাইল নাম্বার সংরক্ষনে রাখুন।আজ না হোক,কোন না কোন এক সময় সেটা কাজে লাগবেই।

•সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি হলো ভাষা জ্ঞান।আপনাদের সবার কাছে আন্তরিক আবেদন যে নিজের স্বার্থে দয়া করে আরবী ভাষাটি নিজ কর্ম ক্ষেত্রের বাহিরে গিয়েও চর্চা করুন।সবাই যা করে তা হলো, যেটুকু দিয়ে কাজ চলে শুধু সেটুকুই শিখে।এটা উচিত নয়।আর এ জন্যই সবচেয়ে বেশী নাযেহাল হওয়া লাগে।






Shares