Main Menu

চিকিৎসার জন্য ভেলোর কিভাবে যাবো

+100%-

CMC-Velloreডেস্ক ২৪:: ভেলোর (Vellore) ইন্ডিয়ার তামিল নাড়ুর (Tamil Nadu ) একটি জেলা শহর যেখানে বাংলাদেশিরা বেশিরভাগ সময় ই যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য । ভেলর শহরে CMC ( Christian Medical College ) ও শ্রী নারায়ণী (Sri Narayani ) Hospital অবস্থিত হওয়ায় এখানে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানুষের আনাগোনা বেশ বেশী । আর এখানে বাংলা ভাষাভাষী রুগীর সংখ্যা ই বেশি এবং এদের বেশিরভাগ ই বাংলাদেশি ।

যা যা প্রয়োজন

যেহেতু ভেলোর ভারতে অবস্থিত তাই আপনাকে আগে ভারত ঢোকার ব্যাবস্থা করতে হবে । বাংলাদেশ থেকে বাইরের যেকোন দেশে যেতে হলে আগে আপনার প্রয়োজন পাসপোর্ট । পাসপোর্ট হল ছাড়পত্র যা আপনার বাইরের দেশে যাবার অনুমতি বহন করে । লাগবে ভারতের ভিসা যা আপনারা ইন্ডিয়ান হাইকমিশন থেকে পাবেন। ভিসা হল যে দেশে যাবেন সেই দেশে প্রবেশ এবং অবস্থানের অনুমুতি পত্র ।

আপনার কয়েক কপি ছবি, পাসপোর্টের কয়েকটি ফটোকপি ও কলম সাথে রাখুন । কলকাতায় এসে সময় পেলে আপনার সর্বশেষ ভিসার কয়েকটি ফটোকপি ( ভারতে জেরক্স/ xerox নামে পরিচিত ) করে রাখুন, কারন সিম কিনতে কাজে লাগবে ।

আপনি সার্ভিস করলে কর্মরত প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিন এবং এর লিখিত ডকুমেন্ট কয়েকটি ফটোকপি সহ সাথে রাখুন । বর্ডারে লাগতে পারে । বাংলাদেশ বর্ডার পার হবার সময় বাংলাদেশ সরকার কে ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হয় । আগে ছিল ৩০০ টাকা এখন তা ৫০০ টাকা করা হয়েছে । বর্ডারেই সেটা হয়ে পেয়ে যাবেন।

কোন পথে যাবো ?

আকাশ পথ কিংবা স্থল পথে যাওয়া যায় । আকাশ পথে যেতে চাইলে আগে থেকেই ভিসায় উল্লেখ থাকবে হবে । প্লেনে সরাসরি ভেলোর যাওয়া যায়না , ঢাকা থেকে চেন্নাই (Chennai ) এ প্লেনে যাওয়া লাগবে । তার পর বাস কিংবা ট্রেনে ভেলোর । ঢাকা থেকে চেন্নাই (Chennai ) সপ্তাহে চার টি প্লেন যাওয়া আসা করে এবং সময় লাগে ২ঘন্টা ৩৫ মিনিটের মত । প্লেনের টিকেট আগে থেকে কেটে রাখলে খরচ কিছুটা কম পড়ে ।

স্থল পথে যেতে চাইলে দেখুন আপনার পাসপোর্টে ভারতে ঢোকার জন্য কোন বর্ডারের উল্লেখ আছে । যদি আপনি হিলি বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া প্রবেশ করেন তবে আপনি মালদা ( Malda ) থেকে কিংবা কলকাতা (Kolkata) থেকে ট্রেন ধরতে পারেন । কলকাতা থেকে ভেলরের দুরত্ব প্রায় ১৭৫০ কিলোমিটার ।

সময় লাগে ৩0-৩৮ ঘন্টা । কলকাতা বা মালদা থেকে সরাসরি কিছু ট্রেন আছে । আবার অনেক সময় একটু ভেঙ্গে ভেঙ্গেও আসতে হতে পারে যেমন: মালদা থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে চেন্নাই, চেন্নাই থেকে ভেলোর ।

ইন্ডিয়াতে দুরের জার্নি গুলো ট্রেনেই ভালো হয় । কলকাতায় কয়েকটি বড় বড় ট্রেন স্টেশন আছে যেখান থেকে ছেড়ে যায় বড় বড় শহরে। হাওড়া ( Howrah ) স্টেশন কিংবা সাতরাগাছী ( Santragachi ) স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে চেন্নাই কিংবা ভেলোরের উদ্দেশ্যে বেশ কয়েকটি ট্রেন ।

ভারতে দুরের ট্রেনের টিকেট পাওয়াটা অনেক সময় কষ্টের হয়ে যায় । কারন ভারতে ট্রেনের যাত্রি অনেক অনেক বেশি । এখানে আগে ছিল ২ মাস আগে থেকে ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যবস্থা এখন সেটা হয়েছে ৪ মাস । তবে ততকাল নামে আর একটি ব্যবস্থা আছে যা ট্রেন ছাড়ার আগের দিন টিকেট ছাড়ে । তাই অনেক সময় কলকাতায় থাকতে হতে পারে ।
কলকাতায় থাকবো কোথায় ?

টিকেট আগে থেকে কাটা না থাকলে কিংবা পেতে সময় লাগলে আপনাকে কলকাতাতে দুই এক রাত থাকতে হতে পারে। কলকাতার সব হোটেলই আপনাকে রাখতে পারবেনা । তবে নিউ মার্কেটের আশে পাশের হোটেল/গেষ্ট হাউজ গুলোতে থাকতে পারেন । ঢাকার বাস গুলো যেখানে থামে সেখানে অর্থাৎ Marquis Street এ বেশ কিছু গেষ্ট হাউজ আছে থাকবার মতো । সেখানে চেক আউট ( হোটেল ছাড়ার সময় ) টাইম দুপুর ১২টা । অর্থাৎ সেখানে দিন কাউন্ট হয় দুপুর ১২টা থেকে পরদিন দুপুর ১২টা । এবং হোটেল ভাড়া ৫০০, ৬০০, ৭০০, ১২০০ বিভিন্ন্ রকমের, সুবিধা ভেদে ভাড়া কম বেশি হয় ।
টাকা / ডলার কোথায় ভাঙ্গাবো ?

টাকা বা ডলার আপনি অনেক জায়গাতেই চেন্জ করতে পারেন । তবে বর্ডারে টাকা বা ডলার চেন্জ রেট টা কম । অর্থাৎ বর্ডারে চেন্জ করলে আপনি পরিমানে কম পেতে পারেন। প্রয়োজনে কিছু চেন্জ করে নিতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় কলকাতায় চেন্জ করে নিলে । তাহলে চেন্জ রেট বেশ ভালো পাওয়া যায় । যেখানে ঢাকার বাস গুলো যেখানে থামে সেখানে অর্থাৎ Marquis Street এ বেশ কিছু মানি চেন্জার আছে । তবে কয়েক দোকানে খোজ নিয়ে যে ভালো রেট দিচ্ছে তার কাছ থেকে চেন্জ করে নিতে পারেন । অনেকেই মনে করতে পারেন যে ভেলোরে গিয়েই ভাংবো ! সে ক্ষেত্রে চেন্জ রেট কম পাবার সম্ভাবনা থাকে । কারোন ভেলরে টাকা চেন্জ হয় অনেক কম । তাই রেট টাও কম ।
বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখবো কিভাবে ?

বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখার মাধ্যম গুলো হতে পারে মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেট । মোবাইল বা ইন্টারনেটের জন্য আপনাকে একটি ইন্ডিয়ান সিম কিনতে হবে । আপনি চাইলে বাংলাদেশি সিম রোমিং করে নিয়ে সেখানে চালাতে পারেন। তবে এক দেশের সিম অন্য দেশে রোমিং করাটা অনেক সময় ঝামেলার কাজ হয়ে যায় এবং কল রেটও বেশি হয় । বর্ডারে অনেক সময় অনেকেই সিম কেনেন । প্রায় ই দেখা যায় সিম গুলো কলকাতার মধ্যেই সীমাবধ্য থাকে, এর বাইরে আর কাজ করেনা । সিম বর্ডারে না কিরে কলকাতাতে কিনুন । এয়ারটেল (Airtel ) কিংবা ভোডাফোন ( Vodafone ) এর সিম কিনতে পারেন ।

সিম কিনার সময় বলুন যে আপনি বাংলাদেশে কথা বলবেন এবং কলকাতার বাইরে যেতে হলে সেটাও বলুন । ইন্ডিয়া থেকে সাধারনত বাংলাদেশে কলরেট ১০‍‍ – ১২ রুপি (INR) । তবে এখানে সিমে প্রোমো রিচার্জ বা পাওয়ার রিচার্জ করে নেয়া যায় বাংলাদেশের জন্য যার মেয়াদ থাকে ৩০দিন । এইটা করলে কলরেট চলে আসে ২ রুপি প্রতি মিনিট । ইন্ডিয়াতে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গেলে সিমে রোমিং চালু হয়ে যায় । এ ক্ষেত্রে আপনি কল রিসিভ করলেও একটা চার্জ কাটা হয় ( প্রায় .৬০ পয়সা মত ) আপনি যদি ভেলোরে এসে সিম কেনেন তাহলে রোমিং চার্জ থাকবেনা (তবে ভেলোরের বাইরে গেলে আবার এই সিমেও রোমিং চালু হবে ), কলকাতার সিম হলে থাকবে । ইন্টারনেটের কোন রোমিং চার্জ নেই । যদি ভেলোরেই বেশি দিন থাকতে হয় তো সেখানেই একটি সিম কিনে নিতে পারেন ।

বাংলাদেশিরা বা যেকোন ফরিনার রা ইন্ডিয়াতে যে সিম কেনে সেটার মেয়াদ থাকে ভিসা ভেলিড থাকা সাপেক্ষে । অর্থাৎ ভিসার মেয়াদ শেষ হলে সিমের মেয়াদ ও শেষ 🙁 লোকাল ডিটেলস দিয়ে সিম নিতে পারলে সেই সিম এক্টিভ থাকে কিন্তু আমাদের পক্ষে সে সিম পাবার সম্ভাবনা নাই বল্লেই চলে কারোন আমরা অন্য দেশের 🙂
ট্রেনের টিকেট কাটবো কিভাবে ?

ভারতে ট্রেনের টিকেট অনলাইনেও কাটা যায়। ইন্ডিয়ান রেইলওয়ের ওয়েবসাইট টি হল http://www.indianrail.gov.in/ . তবে অনেকের ক্ষেত্রেই হয়তো সেটা কঠিন হবে । এজেন্টের মাধ্যমে কিংবা আপনি নিজে স্টেশনে গিয়ে টিকেট কাটতে পারেন । ইন্ডিয়াতে ততকাল নামে একটি টিকেটিং ব্যবস্থা আছে যা প্রতিটি স্টেশনে এমনকি অনলাইনেও আছে । আসলে এই ব্যবস্থাতে ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘন্টা আগে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে । এবং নির্ধারিত কিছু ছিট যাত্রীদের জন্য দেয়া হয় ।

তবে ফরিনার দের জন্য আলাদা একটি সুবিধাও দিয়ে থাকে ইন্ডিয়ান রেইলওয়ে । অর্থাৎ আলাদা কিছু সিট রাখা হয় বিদেশীদের জন্য। এই টিকেট কলকাতায় ফেয়ারলি প্লেস এ দেয়া হয় । পুরো ঠিকানা হল :

এখানে আপনার পাসপোর্ট নিয়ে হাজির হন, আশা করা যায় টিকেট পেয়ে যাবেন । তবে সকাল সকাল এলে সেদিনের টিকেট পাবার সম্ভাবনা বেশি । সকাল সকাল বলতে ১০টার আগে এবং এখানেও ততকালে টিকেট দেয়া হয় । ততকালে টিকেটের দাম একটু বেশিই পড়ে । কেন্সার রুগীদের জন্য এবং তার এটেন্ডেট ( সাথে থাকবেন যে যিনি ) এর জন্য টিকেটে ছাড় আছে ।

ইন্ডিয়ান রেলের সিটের কয়েক প্রকার ক্লাস আছে । প্রধান দুটি ভাগ হল এসি ও নন এসি । নন এসির মধ্যে আছে জেনারেল ( গাদাগাদি সিস্টেম ) এবং স্লিপার ( শুয়ে বসে যাওয়া যায় ) । আর এসির মধ্যে আছে ৩ টায়ার এসি ( উপর থেকে নিচে ৩ জন শোবার এবং পাশাপাশি ৩ জন বসার ব্যবস্থা আছে ), ২টায়ার এসি ( উপর থেকে নিচে ২ জন শোবার এবং পাশাপাশি ২ জন বসার ব্যবস্থা আছে ) । এসি ছিট গুলোতে একটি বালিশ, বালিশ কাভার, একটি বাংকেট / কম্বল, দুটি চাদর ও একটি ছোট তোয়ালে দেয়া হয় তবে নন এসিতে নিজেকেই সাথে নিতে হবে এসব যদি প্রয়োজন মনে করেন ।

ট্রেনের টিকেট করার সময় আপনার কাছে ট্রেনের নাম্বার জানতে চাওয়া হতে পারে । কোন রুটে কোন ট্রেন চলে, কবে কবে চলে এবং তাদের নাম্বার কি জানতে ভিজিট করুন http://www.indianrail.gov.in/between_Imp_Stations.html এই নাম্বার টি সাধারনত ৫ ডিজিটের হয়ে থাকে । যেমনঃ 22818 হল MYS HOWRAH EXP ট্রেনের নাম্বার ।

আপনার টিকেটের স্টেটাস জানার জন্য ইন্ডিয়ান রেইলওয়ের ওয়েব সাইটে ( http://www.indianrail.gov.in/pnr_Enq.html ) গিয়ে PNR Status চেক করুন । অনেক সময় দেখা যায় যে প্রথমে আপনার সিট নাও হতে পারে, তবে পরে আবার সিট হয়ে যায় । তবে ওয়েটিং লিস্ট দুরে থাকলে অনেক সময় রিস্ক হয়ে যায় সিট কনর্ফাম হওয়ার ।

এজেন্টের মাধ্যমেও টিকেট কাটতে পারবেন । এরা টিকেট প্রতি ২০০ থেকে ৭০০ রুপি পর্যন্ত সার্ভিচ চার্জ নেবে । Marquis Street এ বেশ কিছু এজেন্ট পাবেন, আবার হাওড়া স্টেশনের বাইরেও আছে বেশ কিছু এজেন্ট যারা সাধারনত অনলাইন থেকে টিকেট কেটে দেয় ।

ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে ?

হাওড়া স্টেশনে ২৩টি প্লাটফর্ম আছে । এরকম অনেক স্টেসন আছে যার প্লাটফর্ম সংখ্যা বেশ কয়েকটি । ইন্ডিয়াতে প্রতিটি ট্রেনের ইউনিক নাম্বার আছে । আপনার টিকেটেই লিখা থাকবে আপনার ট্রেনের নাম্বার । এবং প্রতিটি স্টেশনেই স্পিকারে এনাউন্চ করা হয় কোন ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে । আবার বড় বড় স্টেসন গুলোতে ডিসপ্লেবোর্ড আছে এবং সেখানেও দেখানো হয় কোন ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে । ট্রেন ছাড়ার ৪০ – ৪৫ মিনিট আগে থেকে ডিসপ্লেবোর্ডে দেখায় ।

ট্রেন ছাড়ার মিনিমাম ২০ মিনিট আগে প্লাটফর্মে যান কারন ট্রেনের বগি অনেক বেশি । অনেকটা পথ হাটতে হতে পারে । তবে যাদের চলাচলে সমস্যা, স্টেশনে খোজ নিন , হুইল চেয়ার পাওয়া যেতে পারে । কিংবা অনেক সময় কুলির ও সাহায্য পাওয়া যেতে পারে কারন ওদের ঠেলাগাড়ি থাকে ।

ছোট স্টেশন গুলোর ক্ষেত্রে স্টেশনে দেখে নিন আপনার ট্রেনটি কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে এবং আপনার বগিটি কোন যায়গায় দাড়াবে । স্টেশন মাস্টার এর রুমের আশে পাশে নোটিশ বোর্ডে ডিটেল্স দেয়া থাকে ।
ট্রেনের ভেতর কি খাবো ?

ট্রেনের যাত্রাটা বেশ বড়ই। আপনি চাইলে আগে থেকেই খাবার নিয়ে ট্রেনে উঠতে পারেন, কিংবা ট্রেনের ভেতরেও খাবার কিনতে পারেন । ওয়েইটার রা এসে অর্ডার নিয়ে যাবে আপনার কাছ থেকে, শুধু একটু খেয়াল রাখতে হবে কখন এলো তারা । আবার বড় বড় স্টেশন গুলোতে ট্রেন বেশ কিছুটা সময় দাড়ায়, সে ক্ষেত্রে প্লাটফর্ম থেকেও খাবার নিতে পারেন ।

শুকনো খাবার হিসেবে নিতে পারেন বিস্কিট, চিপস, কুড়কুড়ে, শুকনো কেক আর ভারি খাবার হিসেবে ভেজ নন ভেজ দু ধরনের খাবার ই পাবেন । ট্রেনের ভিতরের ভেজ খাবার হয় ভেজ কারি রাইস, ভেজ বিরিয়ানি, আর নন ভেজ হয় এগ/আন্ডা বিরিয়ানি, কারি রাইস । দাম ৬০ রুপি থেকে ১০০ রুপির মধ্যে ।

তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার, বাইরের খাবারে বাড়ির খাবারের স্বাধ না খোজাই ভালো 🙂 তবে আপনার জন্য থাকছে যখন তখন চা এর ব্যবস্থা, শুধু কিনে খেতে হবে 🙂

খাবারের কথা যখন এলোই তাহলে আরও একটি বিষয় আসে, তা হল ত্যাগ করা । এসি কামরা গুলোতে সু ব্যবস্থা আছে টয়লেটের, সাবান, পানি, মগ সবই পাবেন । তবে নন এসি কামরার ক্ষেত্রে সাবান এবং একটি ছোট মগ সাথে রাখা ভালো । সাথে রাখুন টিশুও ।
ভেলোর যেতে হলে কোন স্টেশনে নামতে হবে?

ভেলোরের স্টেশনের নাম কাটপাটি স্টেশন ( Katpadi Station )। আপনার টিকেট যদি ভেলোর পর্যন্ত হয় তা হলে আপনাকে নামতে হবে কাটপাটি স্টেসন ।

অনেক সময় কলকাতা থেকে চেন্নাই পর্যন্ত টিকেট করা থাকে । কারন সব ট্রেইন ই কাটপাটি যায়না । সেক্ষেত্রে আপনাকে চেন্নাই সেন্ট্রাল (Chennai Central ) স্টেশনে নামতে হতে পারে আবার কোন কোন ট্রেন চেন্নাই এগমোর ( Chennai Egmore ) স্টেশনে নামিয়ে দেবে আপনাকে । এবার সেখান থেকে বাসে কিংবা ট্রেনেও আপনি ভেলোর আসতে পারেন । ট্রেনে এলে খরচটা কম পড়ে । আপনাকে যদি চেন্নাই এগমোর স্টেশনে নামতে হয় তো সেখান থেকে আপনি আবার চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে আসুন । বাস ভাড়া ৫ রুপি আর অটো ভাড়া ৫০ রুপি । এবার চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে কাটপাটি পর্যন্ত ট্রেনের টিকেট করে চলে আসুন । প্রয়োজনে কর্তব্যরত পুলিশদের সহায়তা নিন স্টেশনে । আবার বড় স্টেশন গুলোতে হেল্প ডেস্কও আছে ।

যদি চেন্নাই এ আপনাকে থাকতে হয় তো চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনের পাশেই কিছু হোটেল/লজ/গেস্ট হাউজ পাবেন ।
ভেলোরে থাকবো কোথায় ?

ভেলোর স্টেশনে নামার পর বাসে কিংবা অটোতে করে আপনি সি এম সি আসতে পারবেন । সি এম সির পাশেই বেশ কিছু হোটেল আছে । সেগুলোতে থাকতে পারেন । কিংবা সাইদাপেট এ ও থাকতে পারেন । হোটেল/লজ ভাড়া ১৫০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত, সুবিধা ভেদে দাম কম বেশি হতে পারে । CMC র পাশের লজ গুলোর ভাড়া একটু বেশি তবে, সাইদাপেট-এর এই পাশটায় ভাড়া একটু কম । হোটেল মেনেজারের সাথে যোগাযোগ করলে রান্নার সরনজাম ও পাবেন নিজে রান্না করে খাবার জন্য । বাংগালি হোটেল ও আছে কিছু ।

যে হোটেল বা লজ এ থাকুন, হোটেল/লজ এর পেমেন্ট স্লিপ গুলো ঠিক মত কালেক্ট করুন এবং সাথে রেখে দিন । পরবর্তি ঝামেলা এড়াতে এগুলো কাজে দেবে । আরও দেখুন ভেলোরে কোথায় থাকবেন তার বিস্তারিত ।

কোন ভাষায় কথা বলবো ?

ইন্ডিয়া অনেক বড় একটি দেশ এবং স্থান ভেদে এদের ভাষার পরিবর্তন ও বেশ । কলকাতা তে আপনি বাংলা, হিন্দি কিংবা ইংলিশ চালিয়ে যেতে পারবেন । তবে তামিল রা হিন্দিতে কথা বলতে অভস্ত নয় এবং বলতে বা শুনতে আগ্রহী ও নয় । তবে ইদানিং হিন্দি চলে। আশার কথা হল ভেলোরের অনেকেই এখন বাংলা কিছু কাছু বোঝে এবং কথাও বলে । CMC র ডাক্তার ও কিছু কিছু বাংলা বোঝেন এবং বলেন । তবে ইংলিস বা হিন্দি ওকে । এখানে অনেক জায়গাতেই বাংলা লেখা দেখতে পাবেন । মোটামুটি চারটা ভাষাঃ তামিল, হিন্দি, বাংলা ও ইংরেজি ।
কি খাবো ভেলোরে ?

আমরা যেমন ভাতে পাগোল তেমনি ভেলোরের স্থানীয়বা ইটলি ( Edti ) তে পাগোল । স্থানীয় খাবার অনেকের পক্ষেই খাওয়া সম্ভব না । কারোন এদের বেশিরভাগ খাবার ই সাধে কিছুটা টক এবং এরা কারি পাতা (Kari Patta ) প্রচুর ব্যবহার করে আমাদের ধনে পাতার মতো ।

কিছু বাঙালি খাবারের ও হোটেল রয়েছে তবে সবগুলতে পুরো বাঙালি সাধ পাওয়া যায়না । ” অন্নপূর্না ” নামে একটি বাঙালি খাবারের হোটেল আছে যেখানে আমি অনকেটা বাঙালি খাবারের সাধ পেয়েছি এবং এখানকার রাধুনিরাও প্রায় সবই বাঙালি ।

আপনি চাইলে নিজেও রান্না করে খেতে পারেন । বেশি দিন থাকতে হলে নিজে রান্না করে খাওয়াটাই ভালো । সবিস্তারে দেখে নিন ভেলোরে খাবারের ব্যবস্থা

তো আজ এ পর্যন্তই, পরের কোন এক আটিকেলে ভেলোরের আরো কিছু বিষয় তুলে ধরা হবে ।

পুরো বিষয়টি আপনার কাছে প্রয়োজনীও মনে হলে অন্যের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেননা কিন্তু। আমি নিজে প্রথমবার অনেকটা ঝামেলা পোহাবার জন্য বিষয়টি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, যাতে আপনারাও একই সমস্যা গুলোতে না পড়েন ।

সবায় সু্স্থ হয়ে দেশে ফিরে আসুন, এই কামনাই রইল …



(পরের সংবাদ) »



Shares