Main Menu

প্রতিদিন খুন ১১ জন

+100%-

 

 

হঠাৎ করেই সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রতিদিনই ঘটছে খুনসহ নানা অপরাধ। চলতি জুনে দেশে প্রতিদিন গড়ে খুন হয়েছে ১১ জন। মে মাসের চেয়ে এই হার চারজন বেশি। এতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শনাক্ত হচ্ছে না অপরাধীরা।

তবে পুলিশ বলছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাবির্কভাবে নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোও দেশজুড়ে খুন-গুমের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন করে প্রতিটি ঘটনার জন্য দায়ীদের শনাক্ত করলেই এই প্রবণতা কমবে বলে মনে করে সুশীল সমাজ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত মে মাসের তুলনায় চলতি জুন মাসে খুন ছিনতাই বেড়ে গেছে এবং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী গত মে মাসে সারা দেশে ২৩৬টি ঘটনায় খুন হয়েছে ৬৪ জন। ছিতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে ৪৮টি। ডাকাতি ৮৬টি এবং অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ১৪৮টি।

চলতি জুন মাসের ১৮ তারিখ পর্যন্ত সারা দেশে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে ১৯১ জন। ছিনতাই ২৮ এবং ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৬১টি।

পরিসংখ্যানে আরো বলা হয়, চলতি মাসে সারা দেশে প্রতিদিন গড়ে খুন হয়েছে ১১ জন। গত মে মাসে যা ছিল ৭ জন।

এসব হত্যাকাণ্ডের বেশির ভাগ ঘটনার সঙ্গেই কোনো-না-কোনোভাবে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো নৃশংস খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে চলছে আলোচনা।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, “সার্বিকভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। পুলিশও তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।”

গত কয়েক দিনের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই ঘটছে খুনসহ নানা অপরাধমূলক ঘটনা। অতি সম্প্রতি বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জে অপহরণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার নজরুল ইসলামসহ সাত খুন।

২০ মে ফেনীতে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান একরামুল হক একরাম এবং ৩১ মে রাতে পাবনার আতাইকুলা থানায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের তিন কর্মীকে একসঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এবং গুলি করে খুন করে সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে নিজ বাসার সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারাত্বক আহত হন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম।

হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে অহরহ। বৃহস্পতিবার বিকেলে হাজারীবাগের ১ নম্বর বাদলপুর লেনে দুই ব্যক্তিকে কুপিয়ে ৩৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। সকালে রামপুরার উলন রোডে বিকাশ কর্মীকে গুলি করে এক লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

এর আগে ২০ মে খিলগাঁওয়ে বিকাশ এজেন্ট ছানাউল্লাহকে কুপিয়ে আট লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় সন্ত্রাসীরা। গত ৮ জুন গাজীপুরে দিনেদুপুরে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির এক কর্মকর্তাকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা ৫০ লাখ টাকা লুট করে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার (বিএমবিএস) প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মে মাসে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ৭৪৬টি। সারা দেশে পৃথক ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৫২০ জনের এবং আহত হয়েছে এক হাজার ১২৫ জন।

রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে ৩৫ জন ও আহত হয়েছে ১১৭ জন। বিএমবিএসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশজুড়ে খুন-গুমের ঘটনা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় জনমনে সীমাহীন উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ছড়িয়ে পড়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে মে মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৭ জন নিহত এবং ৪১২ জন আহত হয়েছে। এছাড়াও মানবাধিকার আরো জানায়, মে মাসে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। এতে দুজন নিহত এবং ২৩১ জন আহত হয়েছে।

সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহারও মারাত্বকভাবে বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে টেণ্ডারবাজিতে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে সন্ত্রাসীরা।



(পরের সংবাদ) »



Shares