Main Menu

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়: রাজনাথ সিংহ

+100%-

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেছেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক বর্তমানে অনন্য উচ্চতায় রয়েছে। বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দুই দেশের এই সম্পর্ককে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোনালি অধ্যায় বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। আগামীতে ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কে নতুন মাত্রা যুক্ত হবে বলে তিনি গভীর আশাবাদ করেন।

শনিবার বিকেলে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ভারতের আর্থিক অনুদানে নির্মিত ‘মৈত্রী ভবনের’ উদ্বোধন শেষে চেমনি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি বক্তব্যে রাজনাথ সিংহ এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ককে ঐতিহাসিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বক্তব্যে বলেন, সন্ত্রাস দমন ও পরস্পরের নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশের চলমান সম্পর্ক সহযোগিতামূলক ও আস্থা এবং গভীর বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

জঙ্গি দমনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী অব্যাহত অভিযানিক তৎপরতা প্রশংসাযোগ্য। ভারত এই ইস্যুতে বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানায়।

রাজনাথ সিংহ বলেন, ভারত-বাংলাদেশ শুধু দুই প্রতিবেশী নয়- দু’দেশ অভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিক, পরিবার ও আত্মীয়তার বন্ধনে এক বিশেষ সম্পর্ক বহন করে। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে নির্মাণাধীন মৈত্রি ভবনটিই বলে দিচ্ছে আমাদের সম্পর্কের মূল সুর।

তিনি আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা ও সন্ত্রাসী শক্তির মোকাবেলায় সব সময় হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছে এবং আগামীতেও করবে বলে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শুধু ভারত-বাংলাদেশ নয়, সমগ্র অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ উন্নয়ন ও প্রগতির পথে একটি গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশ-ভারত একযোগে কাজ করছে। বাংলাদেশে সক্রিয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে ভারত সব সময় সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। প্রয়োজনে সহযোগিতার কথাও বলে আসছে।

রাজনাথ সিংহ বলেন, আমি খুব আনন্দিত যে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে আমাদের সহযোগিতামূলক কর্মসূচি ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে আমরা বাংলাদেশের ৬৮১ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিয়েছি। বাংলাদেশ যদি চায়, আমরা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর আরও সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সম্মত আছি।

এদিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে আমরা ভারতকে পাশে পেয়েছিলাম। এজন্য ভারতের জনগণের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

আগামীতে ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উপনীত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সামগ্রিক দক্ষতা উন্নয়ন ও সহায়তায় বেশকিছু প্রকল্প শুরু হয়েছে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে পুলিশের সক্ষমতা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ অতিরিক্ত আইজিপি নাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারি, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম, ভারতের হায়দ্রাবাদ জাতীয় পুলিশ একাডেমির পরিচালক ডি. ওনী ডলি বর্মণ, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, রাজশাহীস্থ ভারতীয় উপহাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়সহ দুই দেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এদিকে বেলা পৌনে ২টার সময় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ পুলিশ একাডেমিতে পৌঁছালে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফিতা কেটে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী ভবনের উদ্বোধন করেন। পরে একাডেমির চেমনি হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভারতের হায়দ্রাবাদের বল্লব ভাই প্যাটেল ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমির পরিচালক ও পুলিশ একাডেমির অধ্যক্ষ অতিরিক্ত আইজিপি নাজিবুর রহমান সহযোগিতা স্মারক সই ও বিনিময় করেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশি পুলিশ একাডেমিতে নির্মাণাধীন ২৮ হাজার বর্গফুটের বহুতল ভবনটিতে অত্যাধুনিক ফরেনসিক ল্যাবরেটরি, ছদ্ম অপরাধ দৃশ্য, নকল থানা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ কম্পিউটার সেন্টারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা থাকবে যা বাংলাদেশ পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। একাডেমি সূত্রে জানা গেছে মৈত্রী ভবনটি ৫৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ তা সম্পন্ন হবে।



« (পূর্বের সংবাদ)



Shares