তৃণমূলে আমার পরাজয় হয়নি,পরাজয় হয়েছে মুজিব আদর্শের _মাহবুবুল আলম খোকন
তৃণমূলে আমার পরাজয় হয়নি,পরাজয় হয়েছে মুজিব আদর্শের একজন ত্যাগী কর্মীর —আলহাজ্ব এডঃ মাহবুবুল আলম খোকন
… সংযোজন… : মনিরুজ্জামান পলাশ
শ্রদ্ধেয় নেতা কর্মী ও তৃণমূলের ভাই বোনেরা, আসসালামুআলাইকুম,
সকলের প্রতি রইল শুভেচ্ছা। উপজেলা নির্বাচনে নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা ছিল তৃণমূলে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, কতিপয় নেতার অদৃশ্য ইঙ্গিতে এই প্রত্যাশার কবর রচনা হয়েছে। আওয়ামীলীগের দেওয়া তৃণমূলের প্রার্থী ভাল কিংবা মন্দ তা নির্ধারণ করবেন জনগণ ও দলীয় নেতা কর্মীরা ।
নির্বাচনকে ঘিরে একজন মানুষের জীবনে অনেক স্বপ্ন থাকে, পরিশ্রম থাকে। যারা বিনা কারণে এই স্বপ্ন ও পরিশ্রম ধ্বংস করার জন্য দায়ী, ঐ সমস্ত নেতাদের বিচার একদিন রাজনৈতিকভাবেই হবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে বিষয়টি সময়ের ব্যাপার মাত্র। ত্যাগী কর্মীর সংজ্ঞা কি আমি জানি না। তবে আমি দেখেছি তাজ মোঃ ইয়াসিন আওয়ামী রাজনীতির দুঃসময়ে অর্থাৎ জিয়াউর রহমানের শাসন আমলের ছাত্রলীগের ভ্যান গার্ড হিসেবে কাজ করতে গিয়ে জেল খেটেছেন। ইয়াসিন ভাই আমাদের অনেক আগ থেকে আওয়ামীলীগ করা মানুষ। দেন দরবারে তিনি একজন বিচণ ব্যক্তি। অন্যদিকে পুনিয়াউটের হেলাল ভাই একজন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কেন্দ্রীয় ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তা ছাড়া ধরুন আমার কথা, ১৯৮০ সন থেকে আমার ছাত্র রাজনীতির যাত্রা শুরু। এই দীর্ঘ ৩৪ বছরে এমন কোন মিছিল নেই, যেখানে আমি শ্লোগান দেই নি, এমন কোন সভা নেই, যেখানে আমি অনুপস্থিত ছিলাম। এমন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচী নেই যেখানে আমার শ্রম ঘাম ও অর্থ ব্যয় হয়নি। রাজনীতির কারণে বৃদ্ধ মাতা, স্ত্রী, পুত্র কন্যার খোঁজ খবর পর্যন্ত ঠিক ভাবে রাখতে পারিনি। এখনতো সরকারী দল হিসেবে আমরা ভাল আছি। কিন্তু বিগত ২৫ বৎসর আমরা ছিলাম বিরোধী দল। সেই দিন গুলোতে কত যে হয়রানীর শিকার আমরা হয়েছি, কে দেবে তার জবাব? কে নেবে তার হিসাব? রাজনৈতিক মামলার কারণে কতদিন কতরাত কতমাস হুলিয়া নিয়ে ঘরছাড়া বাড়ি ছাড়া থেকেছি এর কোন হিসেব নেই। বিগত জোট সরকারের আমলেও নির্বাচন কমিশনার স.ম জাকারিয়ার বাড়ি ভাংচুরের মামলায় আমি সহ যুবলীগের অনেক নেতা কর্মী প্রায় ৩ মাস বাড়ি ছাড়া অবস্থায় ছিলাম। এ সমস্ত ত্যাগের কথা এখন আর বলে লাভ কি?
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ত্যাগী কর্মীদের ভাগ্যে যা হবার তা-ই হয়েছে। তবে একটি কথা বলা প্রয়োজন যে, ১৭৫৭ সনে পলাশীর আম্রকাননে মীরজাফররা ষড়যন্ত্র করে নবাব সিরাজদৌলাকে উপহাসে পরিণত করেছিল। কিন্তু আজকের প্রজন্মের কাছে নবাব সিরাজদৌলা একজন পূজনীয় ব্যক্তি, আর মিরজাফররা ঘৃণিত হিসেবে চিহ্নিত।এ কারণে বলি যে, কাগজে কলমের ভোটে আমাকে হয়তোবা ১(এক) ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণ, ত্যাগী নেতা কর্মী, এমন কি তৃণমূলের ভাই বোনদের হৃদয়ের আসনে আমি পরাজিত হই নাই। মানুষের যে দোয়া ও ভালবাসা আমি পেয়েছি তা কখনো ভুলবার নয়। তৃণমূলের ভোটে যে টুকু সম্মান মহান আল্লাহ পাক আমাকে দিয়েছেন আমি তাতেই শুকরিয়া।
ছোট্ট শিশুরা ব্যাঙ্গাচিকে ঢিল ছঁড়ে আনন্দ পায় । এ ঢিলে ব্যাঙ্গাচির মৃত্যু হয়। তেমনি ভাবে আমাদের অদৃশ্য নেতারা তৃণমূলে ঢিল ছুঁড়ে আনন্দ পায়। কিন্তু এ ঢিলে রাজনৈতিক কর্মীদের মৃত্যু ঘটে। তবে কোনটি ভাল, আর কোনটি মন্দ তা আল্লাহপাকই ভাল জানেন। ত্যাগী কর্মীদেরকে পরাজয়ে বাধ্য করে, আজ যারা উল্লাস করছেন রাজনীতির জন্য এটি খুব ভাল সংবাদ নয় বলে আমার বিশ্বাস। যোগ্যতার নিরিখে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে গিয়ে অনেক সময় প্রভাবশালীদের দ্বারা অনেক দুঃখ কস্ট পাই। কিন্তু নেতা কর্মীদের প্রচন্ড ভালবাসায় এই দুঃখ বেদনা পরণই ভুলে যাই । তবে যেহেতু আমি দল করি, তাই দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আমি অবিচল আছি, থাকবো। আপনারা যাঁরা আমাকে স্নেহ করেন, মমতা করেন,ভালবাসেন আপনাদের সকলের প্রতি রইলো আমার শ্রদ্ধা । আগামী দিনেও আমি আপনাদের দোয়া ভালবাসা নিয়ে পথ চলতে চাই। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করুন । আমীন ।