Main Menu

বিজয়নগরের ৬১ মুক্তিযোদ্ধাকে ভাতা ফেরত দিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ

+100%-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বন্ধের পাশাপাশি আগে নেওয়া ভাতা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ওই নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার তথা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসককে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভাতা বন্ধের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মিলিশিয়া ক্যাম্পে হানাদার বাহিনীদের সহযোগী ও বেতন ভুক্ত নারী কর্মীর মেয়ে হাজেরা বেগম কুট্টিকে গেজেট ভুক্ত করায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ প্রকৃত এক নারী মুক্তিযোদ্ধাকেও বাদ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এক লিখিত নির্দেশে ৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার ভাতা স্থগিত করেন। সেখানে বলা হয়, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর টেলিফোনিক নির্দেশনা রয়েছে। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বাজেট শাখারও নির্দেশনা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ভাতা থেকে বাদ দেওয়া ৬১ জনের মধ্যে খ্যাতনামা নারী মুক্তিযোদ্ধা সায়রা বেগমের নামও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

এ ব্যাপারে বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সায়রা বেগমসহ ৬১ জনের সকলেই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। আমি এই বিতর্কিত নির্দেশের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে ভাতা চালুর আহ্বান জানাই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আবু হোরায়রাহ, মুক্তিযোদ্ধা দাবি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ওয়াসেল সিদ্দীকি, বিজয়নগর উপজেলার সাবেক কমান্ডার হাবিলদার তারা মিয়া বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে এই দুইটি আদেশ বাতিল করার দাবি জানাই। অন্যথায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় শত শত মুক্তিযোদ্ধা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইবে।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার বলেন, এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহের নিগার বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য কিছু তথ্য প্রমাণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। যাদের এসব কাগজ নেই কিংবা যারা এসব কাগজ জমা দিতে পারেন নি তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ভাতা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি উভয় ঘটনাকে নিন্দনীয় ও দুঃখজনক মর্মে উল্লেখ করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে গঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় যদি এমন কুখ্যাত নারীকে বীরাঙ্গনা হিসাবে তালিকাভুক্ত করে তাহলে আমরা যাব কোথায়? মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি হিসাবে আমরা এসব বিতর্কিত অ-মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য রেজুলেশন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করছি। মন্ত্রণালয়ে ব্যক্তিগত শুনানিতে উপস্থিত হয়ে তথ্য প্রমাণ দাখিল করেছি। এরপরও অদ্যাবধি তাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়নি।সূত্র: দৈনিক  ঈত্তেফাক






Shares