Main Menu

সার সরবরাহ বন্ধে শঙ্কিত বোরো চাষীরা

+100%-

প্রতিনিধি: টানা অবরোধ আর হরতালের কারণে আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে হাওরাঞ্চলসহ সাত জেলায় সার পরিবহনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নৌপথ আংশিক চালু থাকলেও সড়কপথে সার পরিবহন বন্ধ রয়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আসন্ন বোরো মৌসুম নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে চাষীরা।

আশুগঞ্জ সার কারখানা থেকে বাইরের জেলাগুলো সরবরাহ নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে। বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে বরাদ্দ পাওয়া সার সরবরাহ করতে না পারায় বিপাকে পড়েছে ডিলাররাও।

টানা অবরোধ ও হরতালে কারখানা গেটে ও নৌবন্দরে সার নিয়ে আটকা পড়েছে শতাশিক ট্রাক। এভাবে চলতে থাকলে বোরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলসহ সাত জেলায় সার সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।

ফসল চাষের প্রধান সার ইউরিয়ার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলা চাষীরা পুরোপুরি নির্ভরশীল দেশের অন্যতম ইউরিয়া সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আশুগঞ্জ কারখানার ওপর। এখান থেকেই ওই সব জেলার ডিলাররা সড়কপথ ও আংশিক নৌপথে সার সরবরাহ নিয়ে থাকে।

সূত্রমতে, কৃষি বিভাগ থেকে চলতি ডিসেম্বর মাসে সাত জেলার ডিলাদের ইউরিয়া সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার ৮শ’ টন। টানা অবরোধ আর হরতালে গত ১০দিনে ডিলাররা তুলেছেন মাত্র ১১ হাজার টন। কারখানা থেকে ডিলাদের প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার টন সার সরবরাহের কথা থাকলেও পরিবহন সুবিধা না থাকায় ৫শ’ টনের বেশি তোলা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে, সার সরবরাহ ও পরিবহন কাজে জড়িত অর্ধসহস্র শ্রমিকও এখন বেকার হয়ে পড়েছে। কিছু কিছু শ্রমিক কাজ করলেও তাদের আয় নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে।

শ্রমিকরা জানায়, যেখানে প্রতিদিন একজন শ্রমিক ৫শ’ টাকা আয় করতে পারতো সেখানে ট্রাক কম আসায় দেড়শ’ টাকার বেশি রোজগার হচ্ছে না। এতে অসহনীয় কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে তাদের।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কাউছার আহমেদ জানান, ঘন ঘন অবরোধ আর হরতালে সার পরিবহন বন্ধ থাকায় অর্ধশতাধিক ট্রাক চলাচল বন্ধ রেখে বেকার জীবন যাপন করছে চালকরা ও শ্রমিকরা। তাদের বসিয়ে রেখে বেতন দিতে হচ্ছে।

কাউছার আরো বলেন, ব্যাংক ঋণ আর কিস্তিতে কেনা ট্রাক মালিকরা পড়ছে বিপাকে। তাদের প্রতিদিন অন্তত ৫ লাখ টাকা করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

জেলা সার সমিতির সাবেক পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, হরতাল আর অবরোধের কারণে সড়ক পথে সার পরিবহন চরম ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। কারখানা থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৫শ’ টনের বেশে সার সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আসন্ন বোরো মৌসুমে কৃষকের স্বার্থ বিবেচনা করে সার পরিবহন ব্যবস্থাকে হরতাল ও অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানান।

হরতাল আর অবরোধের কারণে সার পরিবহনে যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত সমাধান করা না হলে ট্রাক মালিক ও ডিলারদের যেমন লোকসান গুনতে হবে তেমনি আগামী মৌসুমে সার সঙ্কটের কারণে হাওরাঞ্চলসহ ৭ জেলায় বোরো ধান উৎপাদনেও বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ সার কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, হরতাল অবরোধের কারণে সার পরিবহনে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কপথে সার পরিবহন বন্ধ থাকায় ডিলাররা কারখানা থেকে সার উত্তোলন করছে না। এতে করে শ্রমিকদেরও বেকার সময় কাটছে।






Shares