Main Menu

পরিক্ষা দেয়া হলনা মবিনার, সে এখন শিকলে বাধাঁ!!!

+100%-

এম.ডি.মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর প্রতিনিধিঃএইচ এস সি পরিক্ষার্থী শেখ মুবিনা এখন শিকলে বন্ধি। চৈত্রের দুপুরে একটি টিন সেট ঘরে ৩ মাস যাবৎ বন্ধি জীবন কাটাচ্ছে মেধাবী শিক্ষার্থী মুবিনা। প্রচন্ড গরম,রোদ বৃষ্টি ঝড় তুফানের মধ্যেই রাত দিন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে এ তরুনী। উপজেলা সদর ইউনিয়ন ফুলপুর গ্রামের দিনমজুর শেখ তাজুল ইসলামের বড় মেয়ে মুবিনা।
সে নাসিরনগর ডিগ্রী কলেজের এইচ,এস,সি পরীক্ষার্থী। গত সোমবার সাত সকালে তাজুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার বসত ঘরে শিকলে বাধাঁ অবস্থায় বাশেঁর খুটিতে হেলান দিয়ে বসে আছে মুবিনা। তার টেষ্ট পরিক্ষার পূর্বে রাত জেগে পড়াই কাল হয়ে দাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন মা মাইশন বেগম। সে বই পড়তে পড়তে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ত।

পরিক্ষার কিছুদিন পূর্বে তার মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। ঘুমন্ত অবস্থায় চেচামেচি ,কলেজ সহপাঠিদের ডাকা ডাকি,হৈ হুল্লা চিৎকার করে ঘুম থেকে জেগে উঠে। ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর সহ ঘর থেকে পালিয়ে কলেজের দিকে দৌড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি তার নিত্য সঙ্গী হয়ে দাড়ায়। ঘরের জিনিসপত্র ছুরে ফেলাসহ ছোট ভাই বোনদের মারপিট তার মা বাবাকেও মারপিট করা হয়ে উঠে তার নিত্যা দিনের খেলা।

সাত সকালে এ প্রতিবেদকে দেখে সে বলতে থাকে, আংকেল কেন আমাকে ওরা বেধেঁ রেখেছে? আমাকে কলেজে যেতে দেয়না। আমাকে ওরা পরিক্ষা দিতে দেয়না।আমার শিকল খুলে দিন, আমি কলেজে যাব। এ আর্তি মুবিনার।
কিন্তু বিধিবাম সে যে এখন বড্ড পাগল। শিকল ছাড়তেই সে সম্মুখে যা পায় তা দিয়ে লংকা কান্ড ঘটায়। এ আতংক পরিবার সহ পাড়া পড়শী সবার। অসহায় পিতা বাধ্য হয়ে তাকে শিকলে বন্ধি করে রাখে। স্থানীয় ডাক্তার,কবিরাজ, ঝাড় ফুক কোন কিছুই বাকি রাখেনি। কিন্তু মবিনা ভাল হয়ে উঠেনি। তার চিকিৎসার প্রয়োজন। কিন্তু মুবিনা ভাল হয়ে উঠেনি।

মুবিনার পিতা লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় স্কুল কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে হাত বাড়ায়। জানায় মেয়ের চিকিৎসার আকুতি। এতে তার প্রাইভেট শিক্ষক লিটন স্যার, স্কুল শিক্ষক আলমগীর স্যার, পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম স্যার, কলেজসহ ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাবিবুর রহমানের চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে সে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মানসিক চিকিৎসক ফারুক আলমের তত্বাবধানে রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন সহায় সম্বলহীন পিতা তাজুর ইসলাম সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন। মুবিনার মা আক্ষেপ করে বলেন, আমার মেয়ে উন্নত চিকিৎসা পেলে সুস্থ হযে উঠত।

স্থানীয় ইউপি সদস্য খাইরুল মেম্বার জানান, আমার পক্ষে যতটুকু সম্ভব তাকে চিকিৎসা সহায়তা করব। হাজী বাছির মিয়া ও সহায়তার আশ^াস দেন। এ ব্যপারে নাসিরনগর ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে রং নম্বার বলে কেটে দেন। গত ০৯ এপ্রিল কলেজে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিয়াকত আলীর সাথে। তিনি বলেন পরিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তার চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে উপজেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।






Shares