Main Menu

নাসিরনগরে হঠাৎ ঢেউয়ে লন্ডভন্ড সুরভির স্বপ্ন

+100%-

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সুরভি খানম। পেশায় তিনি শিক্ষক। ২০০৬ সালের পাঁচ জুলাই ভিডাডুবি স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। প্রতিদিনের মতোই স্বাভাবিক নিয়মে চলছিলো তার জীবন সংসার। সকাল বেলা একটু আকাশের রং মেঘলা ছিলো। এরই মধ্যে কিছু বুঝে উঠার আগেই লঙগনের উত্তাল ঢেউ এসে আঘাত আনে সুরভির পাকাঘরে। সব কিছু লন্ডভন্ড করে দেয় রাক্ষসী ঢেউ। ঢেউয়ের সাথে ভেসে যায় সুরভির স্বপ্নও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার সকালে লঙগন নদীতে হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ার সাথে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। প্রায় ৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়তে থাকে লঙগন পাড়ের বসবাসকারীদের ভিটেবাড়িতে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা মতে,‘সকাল ১১টার দিকে আকাশে মেঘ দেখা দেয়। সাথে সাথে শুরু হয় বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। বাতাসের সাথে ঢেউয়ের শক্তিও বৃদ্ধি পেতে থাকে। সাড়ে এগারোটার দিকে পাঁচ-ছয় ফুটের একটি ঢেউ আঘাত করে সুরভির বসত ঘরে। যদিও এটি ছিলো পাকাভবন, তারপরও একে নিরাপদ মনে করছিলেন না সুরভি। সাথে সাথেই তিনি ঘরের আলমিরাতে থাকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করতে তালা খুলেন। কিছু বুঝে উঠার আগেই পাকা ঘরের মেঝে ভেঙ্গে তলিয়ে যায় পানিতে। ফলে ভেতরে থাকা সকল মূল্যবান জিনিসসহ আলমিরাটিই ঢেউয়ের পানিতে ভেসে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় অনেক খোঁজাখুজি করে শেষ পর্যন্ত আলমিরাটি পেলেও এর ভেতর থাকা তার সকল শিক্ষা সনদ, জাতীয়তা সনদ, জমির দলিল, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকার কোন কিছুই পাওয়া যায়নি।

সুরভি কান্না জড়িত কন্ঠে মঙ্গলবার রাতে জানান, নদীর পাড়ের মানুষ হয়েও এত বড় ঢেউ দেখিনি। ঢেউয়ে তীব্রতা দেখে ভয় পেয়েছিলাম। তাই আলমিরার সকল জিনিসপত্র বের করে অন্যত্র নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় ঢেউয়ে আমার পাকাভবনের একটি রুম সম্পূর্ণ দেবে যায়। সাথে আলমিরাতে থাকা আমার শিক্ষা জীবনের সকল মূল সনদপত্র, জায়গা-সম্পত্তির দলিল, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬৫ হাজার টাকা পানিতে ভেসে যায়।

সুরভির স্বামী মোবারক হোসেন জানান, আমরা গত একদিন ধরে খোলা আকাশের নিছে আছি। আমাদের কোন বিছানা বালিশ কিছুই নাই। শরীরে ভীজা কাপড় নিয়ে আছি। ঘরে কোন শুকনো কাপড়ও নাই। এখন সন্ধ্যা হয়ে আসছে। ঘরে ঘুমানোর জায়গা নেই। তিনি আরো জানান, ‘আমরা খুব ভয়ে আছি। যে কোন সময় ঘরটি পানিতে বিলিন হয়ে যেতে পারে। গতকালও খোলা আকাশের নিছে রাত্রিযাপন করেছি। এখন পর্যন্ত সরকারি ভাবে আমাদের কোন পরার্মশ বা খোঁজখবর নেয়নি।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার উম্মে সালমা বলেন, ওই শিক্ষিকার যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা করা হবে।






Shares