Main Menu

নাসিরনগর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অনিয়ম-র্দূণীতির রাম রাজত্ব!!!

+100%-

6666নাসিরনগর সংবাদদাতাঃনাসিরনগরে উপজেলা শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ফারুকের বিরুদ্ধে লাগামহীন দুর্নীতি ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার অনেক শিক্ষক কর্মচারী তার কাছে জিম্মী হয়ে আছে। অভিযোগে প্রকাশ, স্কুল কন্টিজেন্সি,ক্ষুদ্র মেরামত ও সংস্কার,বঙ্গঁমাতা বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট,আন্ত:প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, উন্নত স্কেল, পে-স্কেল, অর্থের বিনিময়ে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈশ্য প্রহরী নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য, স্কুলের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ, নোট-গাইড বিক্রিসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে বরাদ্ধের অর্থ ছাড় করানোর জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ফারুক ব্যাপক অনিয়ম দুনীর্তির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। সরকারের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বরাদ্ধকৃত প্রকল্পের কাজ শতভাগ নিশ্চিত করলেও উৎকোচ ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানের বিল ভাউচারের স্বাক্ষর করেননি। এ নিয়ে ওই শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে এবং চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পিইডিপি-৩ এর আওতায় ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বরাদ্ধকৃত অর্থে মাইনর মেরামত কার্য সম্পাদন করার লক্ষে উপজেলার ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিটির অনুকূলে ৮০ হাজার টাকা করে মোট ১৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকাু বরাদ্ধ দেয়।

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়ণ এবং তা বাস্তবায়ন (স্লিপ) কার্যক্রমের ৪০হাজার টাকা ছাড় করতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ফারুক উপজেলার সবকটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ১৫০০ হাজার টাকা করে প্রায় ১ লাক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষকরা প্রতি মাসের ১ তারিখে বেতন বিল (পে-বিল) পাওয়ার কথা থাকলেও বর্তমানে তা পাচ্ছে না। প্রতি মাসের ৫-৭ তারিখে শিক্ষকদের বেতন তুলতে হচ্ছে। অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের পেনশন ও গ্র্যাচুয়েটি বিল তৈরী করতে দিনের পর দিন অফিসে ধরনা দিতে হচ্ছে। শিক্ষকরা সময়মত চিত্ত বিনোদনের বিলও পাচ্ছে না। মাতৃত্বকালীন ছুটি, আন্তঃ জেলা বদলী, এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানে বদলী, চাকুরীরত অবস্থায় উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তির অনুমতির জন্য উৎকোচ না দিলে তাদেরকে চরম হয়রানির শিকার হতে হয়।

বিভিন্ন সুত্রে আরো জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পত্র যার স্মারক নং- ৩৮.০০০.০০০১১৯.০১৪.০১.১০৫০/৫৮২ তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ এর নির্দেশনা মোতাবেক শতভাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্লিপ কর্যক্রম সম্প্রসারণের নিমিত্তে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বিদ্যালয় প্রতি ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। নাসিরনগর উপজেলার মোট ১২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দকৃত মোট ৪৯ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ছাড় করাতে প্রতিটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে ১৫০০ হাজার টাকা করে সর্বমোট ১ লাক্ষ ছিয়াশি হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ফারুক টাকা ছাড় করণের আগেই তাদের কাছ থেকে নগদ ১৫০০ হাজার টাকা করে গ্রহণ করেন।

এ প্রসঙ্গে নাসিরনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভিতরে ভিতরে অনেক ঘটনা ঘটে, কেউ স্বাক্ষী দিতে চায় না। তাই এব্যাপরে আমার কোন মন্তব্য নেই।

প্রশ্ন উঠেছে, শিক্ষা অফিসার কাজ শুরু করার আগেই উৎকোচের টাকা হাতিয়ে নিলে নূণ্যতম বরাদ্ধে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদেরকে অর্থসংকটে পরতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হেমায়েতুল ফারুক জানান, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। পিইডিপি-৩ বরাদ্ধের টাকা আমরা ব্যাংকে জমা দিয়ে দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে নিচ্ছে।

উপজেলায় ওই শিক্ষা অফিসারের লাগামহীন দুর্নীতি ও রুঢ় আচরণে সাধারণ শিক্ষকগন অতিষ্ঠ হয়ে বিষয়টির সঠিক তদন্ত স্বাপেক্ষে তার অপসারণ সহ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী সহ বিভাগীয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জানান, আমরা এই বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করব।






Shares