Main Menu

টাকা দিলে পূজা মন্ডপে মিলছে নিয়োগ

নাসিরনগর আনসার ও ভিডিপি অফিসে দুর্নীতির মহোৎসব

+100%-

এম.ডি.মুরাদ মৃধা,নাসিরনগর প্রতিনিধিঃ  আগামী ১৫ অক্টোবর হতে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। চট্টগ্রাম বিভাগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে ২য় বৃহত্তম দূর্গা পূজা মন্ডপে পুজা হবে বলে জানা যায়। ২০১৬ সালের ৩০ অক্টোবরে হিন্দু পল্লীতে হামলার পর নাসিরনগরের আইন-শৃংখলা রক্ষার্থে স্থানীয় প্রশানস সর্বাত্তক চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এ বছর নাসিরনগরে ১৩৯ টি পূজামন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে তিনটি ক্যাটাগরিতে মন্ডপ প্রতি ৮ জন, ৬ জন এবং ৪ জন করে প্রায় ৮০০ জন আনসার সদস্য নিয়োগ করার কথা। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটি ইউনিয়নে গিয়ে যাচাই-বাছাই করে ডিউটি প্রদানের কথা থাকলেও অফিসে বসেই করছেন যাচাই-বাছাই। মহিলা প্রশিক্ষিকা রেখা রাণী দাস বলেন, ইউনিয়নে গিয়ে বাছাই করার কোন নিয়ম নেই।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি অফিসের বিরুদ্ধে আনসার নিয়োগে এমনই সীমাহীন দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নাসিরনগর আনসার ভিডিপি অফিসে অনিয়মই যেখানে নিয়মে পরিণত হয়েছে। টাকা দিলে মিলছে নিয়োগ। টাকা না দিলে আসছে চাকুরীচ্যুতি ও ভাতা কর্তনের হুমকী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইউনিয়ন আনসার লিডার জানান, গত বিশ বছর যাবৎ আমাদের অফিসের প্রশিক্ষিকা রেখা রাণী দাস পূজা এবং নির্বাচনের ডিউটি পালনের সময় লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে আসছে। চাকরীর ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না। আর যারা করে তাদের পরবর্তী বছর নাম কেটে দেয়া সহ বিভিন্ন শাস্তি দেয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার(৪ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসউদ পারভেজ মজুমদার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভুগী আনসার সদ্যসরা। অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা রোমন চন্দ্র বিশ্বাস ও মহিলা প্রশিক্ষিকা রেখা রাণী দাস শারদীয় দূর্গাপূজা,স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচনে ডিউটি বাবদ নিরাপত্তার জন্য আনসার নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দূর্নীতি ও অর্থ গ্রহণের । অভিযোগকারী আনসার কমান্ডার মোঃ গিয়াস মিয়া বলেন, আমরা হরিপুর ইউনিয়নের সরকার কর্তৃক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কার্ডধারী আনসার সদস্য। দূর্গপূজায় দায়িত্ব পালনের জন্য তালিকা ভূক্ত হওয়ার জন্য নাসিরনগর উপজেলা আনসার ভিডিপি কার্যালয়ে আসলে আমাদের নিকট দু’হাজার টাকা দাবী করে। এক হাজার টাকা দিতে চাইলে মহিলা প্রশিক্ষিকা রেখা রাণী দাস আমার মুখের উপর টাকা ছুড়ে ফেলে এবং দিয়ে হুমকী দিয়ে বলেন তালিকায় নাম ভূক্ত করতে গেলে ২ হাজার টাকা দিতে হবে অন্যতায় তোমাদের বড় রকমের ক্ষতি করব।
গোয়ালনগর ইউনিয়নের তাপস সরকার বলেন, আমি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আনসার। আমি অফিসের প্রশিক্ষিকার কাছে দলে অর্ন্তভুক্তির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন তোমার সময় হয়নি। প্রশিক্ষণ করলেই পূজার ডিউটি করা যায়না। ডিউটি করতে গেলে বড় স্যারের মন খুশি করতে হয়। অথচ তাপস বলেন, যারা প্রশিক্ষণ করেনি তাদেরকে টাকার বিনিময়ে নিযোগ দেয়া হচ্ছে।
একই অভিযোগ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত আনসার মোঃ রমজান মিয়া, মাসুক মিয়া, পারভীন বেগমের। তারা বলেন, গত বছর ,স্থানীয় সরকার ও জাতীয় নির্বাচনে ডিউটি বাবদ আনসার নিয়োগের সময় উপজেলা আনসার অফিসের প্রশিক্ষিকাকে ২ হাজার টাকা দেওয়া হলেও আমাদের নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। যারা বেশি টাকা দিয়েছে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ সম্পর্কীত একটি ভিডিও এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
উল্লেখ্য গত ২০১৭ সালের পূজা মন্ডপে দায়িত্ব পালন করে ভাতা নেয়ার সময় প্রত্যেক আনসার সদস্যকে ৫০০ টাকা কম দিতে চাইলে সকল আনসার সদস্য প্রতিবাদ করলে সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ লিয়াকত আলীর হস্তক্ষেপে তাদের সমুদয় পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেখা রাণী দাস।
আনসার ভিডিপি অফিসার রোমান চন্দ্র বিশ্বাসকে অফিসে বহুবার গিয়েও পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মহিলা প্রশিক্ষিকা রেখা রাণী দাসের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, আপনার সাথে আমি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে খুশি করব। এসব বিষয়ে নিউজ করার দরকার নেই।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুর রহমান বলেন আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।






Shares