Main Menu

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন : আবহাওয়ার মত ভোটারাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে

+100%-

শামীম উন বাছির :ভোটের দিন সকালে সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর এবং সরাইলের বেশ কয়েকটি কেন্দ্র। কোন ভোট কেন্দ্রেই উল্লেখ্যযোগ্য ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। এর মধ্যে কিছুটা ব্যতিক্রম হল সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সরকারী মহিলা কলেজ। সরকারী মহিলা কলেজে হিন্দু ভোটারদের সংখ্যা অনেক বেশী। কাজীপাড়া সাবেরা সোবহান উচ্চ বিদ্যালয়ে নেতা রাফির নেতৃত্বে কর্মী বাহিনী বিভিন্ন মহল্লা থেকে মহিলা ভোটারদের এনে ভোট গ্রহন করছে।

সময় ১০.৪০ মিনিট কেন্দ্র সূর্যমূখী কিন্ডার গার্ডেন। মোট ভোটারের সংখ্যা ২৮৮০।

প্রিজাইডিং অফিসার জানিয়েছেন ১০০০ এর উপর ভোট গ্রহন হয়েছে। কিন্তু ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মী ছাড়া আর গোটা কয়েক ভোটারকে দেখা গেছে। আড়াই ঘন্টায় শতকরা ৩৫% ভোট কিভাবে হল জিজ্ঞেস করলে প্রিজাইডিং অফিসার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি।

সময় ১১টা কান্দিপাড়া মাদ্রাসা প্রাথমিক বিদ্যালয়

সকাল ৯টায় এখানে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। ১১টার সময় এ কেন্দ্রে বেশ কিছু ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ঐ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩৬৩২ জন। বেলা ১১টা পর্যন্ত ৬০ ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এখানে উপস্থিত বেশ কিছু ভোটার জানান, পাওয়ার হাউজ রোডে বিএনপি’র কর্মীরা ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদান করছে।

তোফায়েল আহমেদ কিন্ডার গার্ডেন সময় ১০.৪৫ মিনিট
সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৩৮৮১টি। ভোট গ্রহন ৫৩৭টি। সকাল ১০.২০ মিনিটে সময় স্কুল চত্বরে বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কাজী পাড়া আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়, সময় ১১.৩০ মিনিট। এ কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি খুব একটা বেশী লক্ষ্য করা যায়নি। তবে আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মী বাহিনী উপস্থিতি এখানে সক্রিয়ভাবে লক্ষ্য করা গেছে। প্রিজাইডিং অফিসার জানান এ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ৪১১৪ জন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১২শ ভোট গ্রহন করা হয়েছে।


সাবেরা সোবহান সরকারী বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র। সময় সকাল ১১টা


এ কেন্দ্রে বেশ কিছু ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এখানে ভোট গ্রহন চলছে। কাজী পাড়ার যুব নেতা গোলাম মোস্তফা রাফি এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ওবায়দুল হক সহ স্হানীয় নেতারা কেন্দ্রের সব কিছুর সমন্বয় করেছেন। এলাকাটি হিন্দুপ্রবণ হওয়ায় এখানে হিন্দু ভোটারদের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২. সরাইল কেন্দ্র:  আলীনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় দুপুর ১২.৩০ মিনিট

এখানে মোট ভোটার ২৯২১। দুপুর ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত এখানে মাত্র ২২৪ টি ভোট দেয়া হয়েছে। এখানে ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। এ আসন থেকে সবাই জোর প্রতিদ্বন্ধিতার আভাস পাওয়া গেছে। মহাজোটের প্রার্থী, জিয়াউল হক মৃধার এলাকা হিসাবে পরিচিত এ কেন্দ্রে  ভোটারদের অনুপস্থিতি ভোটের হিসাবে ব্যাপক প্রভাব পড়বে বলে এলাকাবাসী মন্তব্য করেছেন। মৃধার একজন কর্মী অভিযোগ করেন প্রশাসন এখানে ভোটারদের সমবেত হতে দিচ্ছে না। এ প্রতিবেদক এখানে থাকার সময়ই ম্যাজিস্টেডের নেতৃত্বে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটি দল উপস্থিত হয়। তখন সাথে থাকা পুলিশ সদস্যরা ভোট কেন্দ্রে জমায়েত হওয়া ব্যক্তিদের সরিয়ে দিচ্ছে। জাতীয় পার্টির কর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে সরাইল থানার ওসি জানান, ভোট কেন্দ্রের ৪০০ গজের ভিতরে ভোটার ব্যতীত অন্য কারো থাকা নিষেধ। এখানে অবস্থানের সময়ই পুলিশের বেতার যন্ত্রে শোনা যায়, কুট্টা পাড়ার একটি স্কুলে গন্ডগোল চলছে।

স্থান: সরাইল অন্নদা, সময়: ১২.৩০
সরাইলে এ কেন্দ্রটি একটি প্রধান ভোট কেন্দ্র। এ কেন্দ্রটি জিয়াউল হক মৃধার কেন্দ্র হওয়ায়  সবাই মনে করছিল এ কেন্দ্রে জিয়াউল হক মৃধার পক্ষে ব্যাপক ভোট পড়বে। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টায় এ কেন্দ্রে কোন ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ এলাই মিয়া জানান, এখানে মোট ভোটারের সংখ্যা ২৯২১টি। এর মধ্যে ভোট গ্রহন হয়েছে মাত্র ২১৪টি। এত কম ভোটারের উপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে প্রিজাইডিং অফিসার জানান, প্রতিদ্বন্ধী না থাকায় এবং আবহাওয়ার কারণে ভোটাররা এখানে আসছে না।



স্থান: কালিকচ্ছ, সমাজ সেবা গন মিলনায়তন। সময় : দুপুর ১টা

দুপুর ১টায় এ কেন্দ্রে পরিদর্শনে গিয়ে দলীয় কর্মী ছাড়া কারো উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। আওয়ামী লীগ দলীয় কর্মীরা এখানে প্রকাশ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী নায়ার কবিরের পক্ষে কাজ করছে। এখানে কর্তব্যরত পিজাইডিং অফিসার জানান এ কেন্দ্রে মোট ভোটারের সংখ্যা ২০৬২। দুপুর ১টা পর্যন্ত এখানে মাত্র ৫০০ ভোট পড়েছে। এলাকার একজন মুরুব্বী জানান, এবারের নির্বাচনে কোন প্রকার প্রাণ নেই। এলাকার লোকজন বিশ্বাস করে এ নির্বাচনের কোন গুরুত্ব নেই।

 

 

 

 

স্থান: সূর্যকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়। দুপুর সোয়া ১টা।
এ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের তেমন কোন উপস্থিতি নেই। সাংবাদিক দেখে জিয়াউল হক মৃধার কিছু কর্মী লাইনে দাড়িয়ে ভোটারদের ভুমিকায় অভিনয় করছে। এখানে কর্তব্যরত প্রিজাইডিং অফিসার জানান, দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত এখানে ৬০০ ভোট গ্রহন করা হয়েছে। এখানে মোট ভোটার ১৩৬৫ জন। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ শান্ত ও সুশৃঙ্খল।

স্থান: সরাইল উচালিয়া পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। সময় দুপুর ১:৪৫ মিনিট
এ কেন্দ্রটি সরাইল, কালিকচ্ছ প্রধান সড়কের উপর উপস্থিত। এলাকাটি অতিক্রম করার সময় এখানে হৈচৈ লক্ষ্য করা যায়। কেন্দ্রের বাইরে সেনা বাহিনীর একটি গাড়ী দাড়ানো ছিল। এ কেন্দ্রে সর্বশেষ ভোটারের সংখ্যা ২৪৫০। এ কেন্দ্রে বাইরে দাড়িয়ে নায়ার কবিরের পোলিং এজেন্ট জানায় এখানে জাল ভোট চলছে। এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে প্রশ্ন  করার সময় এখানে প্রবেশ করে জেলা দায়রা জজ,  ইলেকট্ররাল কমিটির চীফ জনাব আবদুর রহিম এবং সহকারী দায়রা জজ কামাল হোসেন শিকদার। উনারা হাতে করে নিয়ে আসেন কিছু ব্যালট, সেখানে মৃধার প্রতীক লাঙ্গলে ছাপ দেয়া ছিল। দায়রা জজ জানান, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার জোবায়দা খাতুন সিল দেয়া ব্যালট গুলো বাক্সে ঢুকাবার সময় হাতে নাতে আটক করা হয়েছে। অভিযুক্ত জোবায়দা খাতুন জানান, আওয়ামী লীগের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়া প্রার্থী শিউলী আজাদ ওনার কাছ থেকে জোর পূর্বক ব্যালট বই ছিনিয়ে নেন। সাথে থাকে কয়েকজন যুবক। তারা জোর পূর্বক লাঙ্গল প্রতীকে সীল দিতে থাকে। জেলা দায়রা জানান, আমরা আপাতত সিল দেয়া ব্যালট পেপার গুলি বাজেয়াপ্ত করেছি এবং অবৈধভাবে ব্যালট পেপার বাক্সে ঢুকানোর অভিযোগে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে আটক করা হয়েছে। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, এ কেন্দ্র থেকে অবৈধভাবে ভোট প্রদানের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে।






Shares