Main Menu

সরাইলের মক্ষীরাণী মোর্শেদা গ্রেপ্তার, ছাড়িয়ে আনতে শক্তিশালী সিন্ডিকেট

+100%-

প্রতিনিধিঃ তার রয়েছে দুজন বডির্গাড। তাদেরকে মোটা অংকের বেতন দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা সদরের সকাল বাজারের পাশে চারতলা থাকেন ভাড়া বাসায়। সে বলে বেড়ান তার স্বামী প্রবাসে। নিজের পরিচয় দেন ডাক্তার বলে। তার রয়েছে বিশাল শক্তিশালী সিন্ডিকেট। নাম তার মোর্শেদা বেগম (৩২)।  জেলা শহরের বিলাস বহুল প্লাটে ভাড়া থাকে তার একাধিক সহযোগী। খদ্দের যোগাড়ের জন্য রয়েছে বেতন ভুক্ত কিছু কর্মচারী। বেকার যুবক যুবতী তার মূল টার্গেট। চালচলন ও বাজার দেখলে মনে হয় তিনি কোটিপতি। তার এ কাজে সহযোগী কিছু প্রবাসীর স্ত্রী।  প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরকে ম্যানেজ করেই এক যুগেরও অধিক সময় ধরে করছে অসামাজিক কাজ। কৌশলে কামিয়ে যাচ্ছে মোটা অংকের টাকা। টাকার বিনিময়ে পেছন থেকে মোর্শেদাকে শেল্টার দিচ্ছেন কিছু চিহ্নিত সমাজপতি। এলাকার বখাটে যুবক ছেলেরা। তার রয়েছে বিভিন্ন এলাকায় নিরিবিলি ভাড়াকরা বাসা। সে মোবাইল ফোনে খদ্দরদের বিভিন্ন বাসায় পাটান। নিজ বাসা, হাসপাতাল ও উপজেলার কয়েকটি দফতর তার নিরাপদ স্থান। কিছু সরকারি কর্মকর্তা ও সমাজপতিকে নারী ভোগের সুযোগ দিয়ে মন জয় করে চলেছে। কেউ মুখ খুলতে চাইলেই মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। সরাইলের সকলের কাছে মোর্শেদা মক্ষীরাণী হিসেবেই পরিচিত।
গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সরাইলের সকাল বাজার এলাকার তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযান কালে মক্ষীরাণী মোর্শেদা ও তার এক কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর ওই কর্মচারী মোর্শেদার সকল অপকর্ম ফাঁস করে দিয়েছে। মোর্শেদাকে ছাড়িয়ে নিতে তদবিরে নেমেছে প্রভাবশালীরা। এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, উপজেলার বিটঘর গ্রামের শাহেদ মিয়ার কন্যা মোর্শেদা। নিজেকে প্রবাসীর স্ত্রী পরিচয় দেয়। তার দাবী স্বামী ভূঁইশ্বর গ্রামের মালু মিয়ার পুত্র শফিকুল ইসলাম। শফিকুল গত চার বছর যাবৎ প্রবাসে আছেন। সুযোগে মোর্শেদা সরাইলের বিভিন্ন মহল্লায় ভাড়া থেকে দেহ ব্যবসা করছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মেয়ে এনে খদ্দেরের মন জয় করাই তার মূল পেশা। লোক সমাজে নিজেকে ডাক্তার বলে পরিচয় দিচ্ছে। গর্ভবতী মেয়েদের এম আর ও প্যাথলজিতে বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যস্ততার ভাব দেখান। সকাল বাজার এলাকায় তাজুল ইসলামের বাড়ির চার তলায় মাসিক আড়াই হাজার টাকায় ভাড়া থাকে সে। দিনে রাতে তার বাসায় চলে দেহ ব্যবসা। খদ্দের বেশী হলে ভবনের ছাদে চলে অবাধ মনোরঞ্জন। ঘন্টা ও রাত ব্যাপী হিসাব করা হয় টাকা। জেলা শহরে রয়েছে তার অনেক সহযোগী। তারা সেখান থেকে নরমাল এবং ভি আই পি দুই ধরনের কলগার্ল ম্যানেজ করে রাখে। মোর্শেদার ফোন পাওয়া মাত্র ছুটে আসে সরাইলে। অনেক সময় আত্মীয় পরিচয় দিয়ে মিষ্টির প্যাকেট হাতে তার বাসায় প্রবেশ করে খদ্দেরেরা। নীচ থেকে কল করা মাত্র চার তলা থেকে সূতা দিয়ে চাবি ফেলে মোর্শেদা। ভিতরে প্রবেশ করা মাত্র গেইট লক। মেয়ে পছন্দের জন্য ঠিকানা দেয় হাসপাতালের। সময় সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে। পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার দক্ষিন পাশের নিরিবিলি জায়গায় চলে পছন্দের কাজ। হাসপাতালের জনৈক পিয়ন মোর্শেদাকে এ কাজে সহায়তা করে। বিনিময়ে তাকে দেয়া হয় মাসোহারা। পছন্দ হলে অবস্থা বুঝে অনেক সময় সেখানেও চলে আনন্দ ফূর্তি। স্থানীয় কৃষি অফিসে হাসান নামক নাইট গার্ডের সহায়তায় চলে দেহ ভোগ বাণিজ্য। উপজেলার কিছু কর্মকর্তাকেও মেয়ে সাপ্লাই দেয় মোর্শেদা। মুঠো ফোনের মাধ্যমে মক্ষীরাণী মোর্শেদা তার পুরো ব্যবসা পরিচালনা করছে। এ জন্য অনেক কর্মকর্তার কাছে মোর্শেদার কদরের শেষ নেই। এ কাজে সে মাসিক ও দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে অনেক যুবক যুবতীকে নিয়োগ করে রেখেছে। উপজেলার রসুলপুর, চুন্টা ও ভূঁইশ্বর গ্রামে রয়েছে মোর্শেদার দেহ ব্যবসার গোপন আস্তানা। যেখানে চলে মদ জুয়া ও নারী ভোগের অবাধ বাণিজ্য। সৈয়দটুলার রহমান জানায়, শেয়ার ব্যবসা করে ৮ লাখ টাকা গচ্ছা দিয়েছি। বর্তমানে অবস্থা খুবই খারাপ। বিষয়টি জেনে মোর্শেদা আমাকে চাকুরীর অফার দেয়। মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা। খাওয়া থাকা ফ্রি। দ্রুত সম্মত হয় তার প্রস্তাবে। ১৮ দিন কাজ করেছি। ডিউটি মেয়ে আনা নেওয়া। পুরুষ খদ্দের জোগাড় করা। মোট কথা নষ্ট জগৎ। পারিবারিক ও সামাজিক চাপে এ জগৎ থেকে বেড়িয়ে আসার প্রস্তাব দেয়। বেঁকে বসে মোর্শেদা। তার অন্ধকার জগতের সব কিছু জেনে গেছি। এ জন্য সে আমাকে মামলায় ফাঁসানো সহ নানান ধরনের হুমকি দেয়। তার ভাড়া বাসার মালিক প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী জলি বেগম (৪০) বলেন, মোর্শেদা আমার এখানে ভাড়া আসার কিছু দিন পর সন্দেহ হয়। দিনে রাতে ছেলে মেয়েরা অবাধে এখানে আসে। কারন জানতে চাইলে বলে চিকিৎসার জন্য এসেছে। পরে ভাড়া ছাড়াই প্রত্যেক দিন আমাকে এক শত টাকা দেয়। গ্রেপ্তারকৃত মক্ষীরাণী  মোর্শেদা বলে, মূলত আমি এখানে চিকিৎসা করি। এ জন্য অনেক লোক আসে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উত্তম কুমার চক্রবর্তী বলেন, শুনেছি মোর্শেদা ১২ বছরের ও অধিক সময় ধরে বাসা বদলের মাধ্যমে দেহ ব্যবসা করছে। তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছি। পরে তার বিরুদ্ধে ২৯০ ধারায় প্রসিকিউশন দাখিল করা হবে।






Shares