Main Menu

পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে অনিয়মের অভিযোগ, উত্তাল দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

+100%-

মোহাম্মদ মাসুদ,সরাইল ॥ সরাইলের শাহজাদাপুর ইউনিয়নের দেওড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। গত শনিবার ২০১৭ সালের নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরই ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে অকৃতকার্যরা। হামলা, ভাংচুর ও তালা ঝুলিয়েও তৃপ্ত হতে পারেনি তারা। দাবী আদায়ের জন্য একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে বেসামাল হয়ে ওঠেছে সেখানকার শিক্ষার্থীরা।

সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত ও আহত হয়েছেন অভিভাবক প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও দপ্তরি আবুল হাশেম।

৩ বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়বার পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না কমিটি ও শিক্ষকরা। ৪ বিষয় বা তার অধিক বিষয়ে অকৃতকার্যরা ও ফরম পূরণের দাবীতে আন্দোলন করছে। তবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষককে দায়ী করেছেন কমিটির একাধিক সদস্য।

স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, ফল প্রকাশের পর থেকেই অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম উত্তেজনা। এ বছর ৩ গ্রুপের মোট ২৭১ জন শিক্ষার্থী নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছিল। ফলাফলে কৃতকার্য হয়েছে ৬৭ জন। আর অনিয়মিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৩ জন। অকৃতকার্য ১৬১ জন শিক্ষার্থী ফলাফল মেনে নিতে পারছে না। শনিবারের পর থেকেই শিক্ষার্থীরা কখনো শিক্ষক, কখনো অভিভাবক প্রতিনিধির উপর ক্ষিপ্ত হচ্ছে।

তারা ফরম পূরণের টাকা আদায়েও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। গত মঙ্গলবার টাকা আদায়ের সময় মাঠ থেকে শিক্ষকদের লক্ষ করে এলোপাতাড়ি ঢিল ছুঁড়তে থাকে ছাত্ররা। এ সময় একটি কক্ষে আটকা পড়েন শিক্ষক প্রিয়লাল ভৌমিক, দপ্তরি হাসিনুর ও অভিভাবক প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী। এক পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে তারা দৌঁড়ে কক্ষটি ত্যাগ করতে বাধ্য হন। এ সময় ছাত্রদের হামলায় লাঞ্ছিত ও আহত হন অভিভাবক প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম চৌধুরী ও দপ্তরি আবুল হাশেম।

মঙ্গলবার গভীর রাতে কে বা কাহারা প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক মিলনায়তন ও বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ৬-৭টি তালা কেটে পুনরায় কর্মকান্ড শুরু করেন কর্তৃপক্ষ।

এসব ঘটনায় বিকেলে ব্যবস্থাপনা পরিষদের আহবানে স্কুল মিলনায়তনে বসে ২ শতাধিক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনে আলোচনা সভা। সভায় আমিনুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের হামলায় আহত হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে এ ঘটনায় জড়িততের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

দাতা সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন প্রকাশ্য সভায় বলেন, শিক্ষক মনিজুর রহমান ও আইয়ুবুর রহমান এ ঘটনার জন্য দায়ী। তাদের একান্ত গোপন সিদ্ধান্তে খাতা মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ করে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছেন। সবকিছুর আগে তাদের বিচার হওয়া উচিত।

মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ইমন চৌধুরী, ব্যবসা শিক্ষা শাখার মেহেদী আহমেদ ও ইমরান হোসেন জানায়, খাতা মূল্যায়নে জালিয়াতি করেছেন ২-৩ জন শিক্ষক ও কমিটির ২/১ জন। তারা নিজেদের ছাত্রছাত্রীদের কৌশলে ২ নাম্বারি করে পার করে দিয়েছেন। আমরা ফেল করার মত পরীক্ষা দেয়নি। আমাদেরকে ফরম পূরনের সুযোগ দিতেই হবে।

সভায় ৩ বিষয়ে অকৃতকার্যদের পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিলেও বৃহস্পতিবার থেমে যায় সেই সিদ্ধান্ত। এখন কি করবেন তা ঠিক করতে দফায় দফায় সভায় বসছেন কর্তৃপক্ষ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তুমুল হট্রগোলের মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় চলছিল সভা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, সব বিষয়ে পাস করেছিল মাত্র ১৬ জন। পরে মনির স্যার, আইয়ুব স্যার সভাপতির সাথে পরামর্শ করে বামের শুন্যকে ১ বানিয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে ২ বানিয়ে মোট ৬৭ জনকে পাস করিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সদস্য সচিব মোঃ বিলাত খা’র মুঠোফোনে (০১৭১৪-২৮৬৮০০) ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি অনেক জার্নি করে এসেছি। খুবই ক্লান্ত। এখন কোন কথা বলতে পারব না। পরে বলব, পরে বলব বলে অনেকটা এড়িয়ে যান।






Shares