সরাইলে মাদ্রাসা ছাত্র হত্যা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন, উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ
মোহাম্মদ মাসুদ,সরাইল ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় মাদ্রাসা ছাত্র জুনায়েদ মিয়ার (১০) হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু আদালতের বিচারক মো. মঈনউদ্দিন এ রায় দেন।
রায়ে সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আঁখিতারা গ্রামের নারায়ন চন্দ্র দাসের ছেলে সুকুমার চন্দ্র দাস ও পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের ছানাউল্লাহকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। একইসঙ্গে কালীকচ্ছ ইউনিয়নের দত্তপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে মো. সুমনকে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয় আদালত। হত্যা মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ কে এম আহসানুল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামের রফিকুল হকের ছেলে জুনায়েদকে ২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলা সদরের আলীনগর জামিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা এলাকা অপহরণ করা হয়। ওই দিন রাতে অপরণকারীরা মুঠোফোনে জুনায়েদের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে। ১৪ সেপ্টেম্বর সকালে জুনায়েদের চাচা নাজমুল হক বিকাশের মাধ্যমে অপহরণকারীদেরকে ২০ হাজার টাকা পাঠান। অপহরণকারীরা বাকি টাকা ওই দিন সন্ধ্যার মধ্যে পরিশোধের জন্য জুনায়েদের পরিবারকে বলেন। ১৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তী বিল এলাকা থেকে জুনায়েদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে জুনায়েদের চাচা নাজমুল হক বাদী হয়ে কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মামলাটি তদন্ত করে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সোমবার বিকেলে সরাইল প্রেসক্লাবে উপস্তিত হয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জুনায়েদের মা ফিরোজা বেগম বলেন, টিঘর গ্রামের বাসিন্দা সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানের পরিবারের সহায়তার কারণে সুমন মিয়ার সাজা কম হয়েছে। তাঁর পরিবার আসামি পক্ষকে নানাভাবে সহায়তা করেছে।
তবে আবদুর রহমান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন বাদী পক্ষ অনুমান করে এমনটি বলছেন। আমিও চেয়েছি এ ঘটনার যেন সুষ্ঠু বিচার হয়।