Main Menu

মোকতাদির চৌধুরীর মন্ত্রীত্বের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী সোচ্চার

+100%-

নিজস্ব প্রতিবেদক :  ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি সমৃদ্ধশালী জেলা। এর ভিতর সদর উপজেলার গুরুত্ব অনেক বেশী। সমস্ত জেলার কর্মকান্ড পরিচালিত হয় সদর উপজেলা থেকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রাজধানী ধরা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরকে। জেলার সমস্ত রাজনীতি আবর্তিত হয় সদর আসন থেকে। এ জেলার রাজনৈতিক দুষ্টি ভঙ্গি প্রতিকলিত হয় সদর আসন থেকে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি/সাধারন সম্পাদক বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে তাদের তাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালিত করেন সদর থেকে। জেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড ও পরিচালিত হয় এখান থেকেই। জেলার বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন সব কিছু এখান থেকেই পরিচালিত হয়।

কয়েকদিন পূর্বে শেষ হয়েছে ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ জেলা থেকে দুটি আসন থেকে ব্যারিষ্টার আনিসুল হক এবং ক্যাপ্টেন তাজ, সম্পূর্ণ প্রতিদ্বন্ধিতাবিহীন অবস্থায় নির্বাচিত। গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় জন প্রতিনিধির মুল্যায়ন হয় প্রতিদ্বন্দ্বিতার উপর। এদিক দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন র আ ম ওবায়দুল মোকতাদিও চৌধুরী। দুই লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এখন পর্যন্ত এটাই সর্বোচ্চ ভোটের রেকর্ড। এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী অপেক্ষা করছে এক জন মন্ত্রীর জন্য। বহুদিন থেকে এ এলাকার মানুষ মন্ত্রীত্ব ছাড়া অবস্থায়। সর্বশেষ এ আসন থেকে মন্ত্রী হয়েছিলেন জেলা বিএনপি’র সভাপতি আলহাজ্ব এডভোকেট হারুন আল রশিদ। এর পর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ দেড় যুগ।

হ্যা তর্কের খাতিরে বলা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন মন্ত্রী ছিল। উনি হলেন ক্যাপ্টেন অবসরপ্রাপ্ত এবি এম তাজুল ইসলাম। এ সরকারের আামলে জেলার একমাত্র মন্ত্রী ছিলেন উনিই।গত ৫ বৎসরে ক্যাপ্টেন তাজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া দেখা গেছে খুবই কদাচিৎ। উনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসেছেন মৃত্যুর শোক জানাতে, জানাযা পড়তে, সদরের সাংসদ মরহুম লুৎফ’ল হাই সাচ্চুর জানাযায় এসেছেন,এসেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মেজর (অবঃ) জহিরের জানাযায়।

সদরবাসী এটা ভালই বুঝতে পেরেছেন যে ক্যাপ্টেন তাজ মন্ত্রী হয়েছেন জানাযা পড়ার জন্য। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হয় এখান থেকেই। জেলা উন্নয়ন কর্মকান্ডের কোন বৈঠকে উপস্থিতি ছিলেন না ক্যাপ্টেন তাজ। দলীয় কোন সমাবেশে বা বৈঠকেও উনি ছিলেন অনুপস্থিত।

৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন শেষে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বিহীন, ভোট বিহীন অবস্থায় জয়ী হয়ে ক্যাপ্টেন তাজ আবারও মন্ত্রী হবেন এটা আওয়ামী লীগের সাধারণ কর্মীরাও মনে করে না।

হ্যা, বাতাসে জোর আলোচনা হচ্ছে কসবা-আখাউড়া থেকে নির্বাচিত সাংসদ বিশিষ্ট আইনজীবি আনিসুল হক সরকারের আইনমন্ত্রী হবে। বর্তমান এমপি শাহ আলমকে বাদ দিয়ে তাকে মনোনয়ন প্রদানের খবরের পাশাপাশি তিনিই যে মন্ত্রী হবেন তা ছড়িয়ে পড়ে সমস্ত জেলায়। শুধু তার নির্বাচনী এলাকার মানুষই নন, পুরো জেলার মানুষই তা বিশ্বাস করেন। অবস্থান গত কারণে তার মন্ত্রী হওয়ার খবরটিতে বাস্তবতা রহেছে।

নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের ছিল অনাগ্রহ, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সর্ম্পকে জেলার মানুষ খুব একটা মাথা ঘামায়নি। তবে রাজনৈতিক সচেতন এ এলাকার মানুষের আড্ডা  আলোচনায় সরবে নিরবে জায়গা করে নিয়েছিল মন্ত্রীত্বের আলোচনা। ২০১১ সালের উপনির্বাচনে ও র.আ.ম ওবায়দুল মোকতাদিও চৌধুরী নির্বাচনী প্রচারণায় ছিল তার মন্ত্রীত্ব পাওয়ার কথা। নির্বাচনী প্রচারণায় দলীয় নেতা কর্মীরা সবাই এক বাক্যে বলেছেন মন্ত্রীত্ব পাবার কথা। তবে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রীত্ব মেলেনি।

এবারের নির্বাচনী প্রচারণা একটি বড় প্রচার ছিল মোকতাদিরের মন্ত্রী হওয়ার বিষয়টি। কর্মীদের মুখে মুখে এ কথা ছড়িয়ে গেছে সবার কাছে। এমনকি মাইকে মোকতাদির চৌধুরীর পক্ষে যে প্রচারণা চালানো হয়েছে তাতেও মন্ত্রীত্বেও বিষয়টি প্রচার হয়েছে বড় জোরে-শোরে।

র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের যে উন্নয়ন করেছেন গত সাড়ে তিন বছরে তা স্বাধীনতার পর এ এলাকার নির্দিষ্ট সময়ের হিসাবে সবচেয়ে বেশী। সারা দেশের অন্যান্য জেলায় সরকারী মদদপুষ্ট ব্যক্তিদের নানা রকম ক্ষমতার অপব্যবহারের কথা শুনা গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিল এ থেকে মুক্ত। মরহুম এডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চুর জীবিত কালীণ সময়ে নেতা কর্মীদের বিরুদ্বে ক্ষমতার অপব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ উঠেছিল। মোকতাদির চৌধুরী ক্ষমতায় এসে এসব কিছুর নিয়ন্ত্রণ করেন প্রথমেই। র.আ.ম ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী এমপি গত উপনির্বাচনের বিজয়লাভের পরের দিন থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছিনতাই, চাদাবাজি, টেন্ডারবাজী অস্বাভাবিকভাবে কমে যায়। ক্ষমতায় উনার আচরণ কেমন হবে তা বুঝা যায় উপ নির্বাচনের দিন সন্ধায়। প্রতিটি এলাকা থেকে বিজয় মিছিল গিয়ে সমবেত হয় নির্বাচনী অফিসে। দলের নেতা ও কর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিজয় মিছিল বা শো ডাউন করতে। পুরো এলাকা জরাকীর্ণ হয়ে গেলে রবিউল সাহেব মাইক হাতে নিয়ে খুব সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। প্রথমে উনি আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করেন। দলের নেতাকর্মীদের প্রতি জানান অশেষ কৃতজ্ঞতা এবং এর পরেই উনি বলেন নির্বাচন করতে গিয়ে আপনারা এখন ক্লান্ত। বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নেন। বক্তব্যে হোচট হায় অনেক নেতা কর্মীরা। বুঝে উঠতে পারছেনা কি করবে। চুপচাপ চলে যায় যার যার বাড়িতে।

মোকতাদির চৌধুরী ক্ষমতায় থাকা কালীণ বিরোধী দলের কোন নেতা কর্মীকে প্রতিহিংসামূলক ভাবে নির্যাতিত হতে হয়নি। জেলে যেতেও হয়নি। শুধু কিছুদিন পূর্বে জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকে জেলে যেতে হয়েছে। তবে এটাও হয়েছে সরকারী নীতি নির্ধারকদের কারণে।

রআ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সময় জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে উন্নয়নের স্থান পড়েছে।ব্রাহ্মণবাড়িয়া উনি প্রচুর উন্নয়ন করেছেন, উল্লেখ্যযোগ্য কিছু উন্নয়নের কথা না বললেই নয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালটি এ এলাকার প্রান্তিক জনগনের চিকিৎসার একমাত্র ভরসা স্থল। এ হাসপাতালটি ছিল ১০০ শয্যার। মোকতাদির চৌধুরী এটিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত করেছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে বহু উন্নত ধরনের যন্ত্রপাতি বর্তমান।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া একটি নদী হাওর বেষ্টিত জেলা। এ জেলায় মেঘনা তিতাস নদীর তীরে গড়ে উঠেছে। নদী ভাঙ্গন, নদী শাসন, নদীর তীরে বাধ নির্মাণ এগুলো ছিল এ এলাকার মানুষের সপ্ন। কুমিল্লা জেলা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজগুলো। এই মন্ত্রণালয়ের বরাদ্ধের খুবই একটা ক্ষুদ্র অংশ দিয়ে এখানে কাজ হত। কাজও হত খুবই নিম্নমানের। ঠিকাদাররা কাজ বাগিয়ে নিত কুমিল্লা থেকেই।

র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী সাংসদ হবার পর হন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় সর্ম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি। সভাপতি হয়েই উনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়ে আসেন নির্বাহী প্রকোশলীল দপ্তর। নির্বাহী প্রকোশলীর দপ্তর হওয়ার পর এখানে কাজ হয়েছে কোটি কোটি টাকার। শহর প্রতিরক্ষা বাধ নির্মাণ করে শহরকে রক্ষা করা হয়েছে নদী ভাঙ্গন থেকে।

শহরের মোড়াইল রেলওয়ে ক্রসিং উপর নির্মান করা হচ্ছে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিতব্য ওভার পাস। ওভার পাস টি নির্মিত হলে শহরের দীর্ঘ দিনের যানযট অনেকটা হ্রাস পাবে। র,আ,ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির একান্ত পরিশ্রমে এই ওভার পাসটি নির্মিত হচ্ছে। এই প্রকল্প ছাড়াও গত ১০ সেপ্টেম্বর একনেকের সভায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিতব্য শেখ হাসিনা সড়কের (সীমলা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক),  ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের শীমরাইলকান্দী এলাকায় তিতাস নদীর উপর ২৪৫ মিটার লম্বা ব্রীজের ২টি প্রকল্প অনুমোদন হয়। একনেক সভায় ওভার পাস প্রকল্পটি ব্যয় করা হয়েছে ১৪ কোটি ২৬ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা প্রকল্পটি চলতি শুরু হয়ে ২০১৬ সালের জুন মাস নাগাদ এর কাজ সম্পন্ন হবে। ৭৪ কোটি ২৬ লক্ষ ০৭ হাজার টাকার প্রকল্পের অঙ্গভিত্তিক ব্যায় খাত থেকে জানা গেছে প্রকল্পটি ভূমি অধিগ্রহনে ব্যয় হবে ২৩ কোটি ৬০ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা। মাটির কাজে ব্যয় হবে ৪৫ লক্ষ টাকা। পেবমেন্ট প্রস্তুত করন ও শক্তিশালী খাতে ব্যয় হবে ৫৭ লক্ষ ২৮ হাজার টাকা। ভায়াডাক্ট ফুটপাত, রেলিং ট্রাফিক সিগনেল, বিদ্যুতায়ন ও সৌন্দর্য ধরন ইত্যাদি সহ ওভার পাস নির্মানে ব্যায় হবে ৪৬ কোটি ৩৯ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। সসার ড্রেন নির্মান ব্যায় ধরা হয়েছে ৮ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকা। সার্ফেস ইউ ড্রেন নির্মানে ব্যায় হবে ৯ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা, রিটার্নিং ওয়াল নির্মানে ব্যয় হবে ৪১ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা। ইউটিলিটি সিসটিং ব্যয় হবে ১ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা।

স্কুলে ভর্তি সমস্যা একটি বিরাট সস্যা। বছরের প্রথমে অভিভাবকদের গলদঘর্ম হতে হয় ভর্তি নিয়ে। মোকতাদির চৌধুরী এবার প্রতিটি সরকারী স্কুলে সিটের সংখ্যা দশটি করে বাড়িয়েছেন।

ক্যাপ্টেন তাজ কে জেলার মন্ত্রী না বলে বাঞ্চারামপুরের মন্ত্রী বলা উচিত। মন্ত্রী হবার সুবাদে উনি এমন অনেকগুলো কাজ করেছেন, যার সুফল থেকে জেলার একটি বৃহদাংশ বঞ্চিত হবে। এমনই একটি কাজ হল কৃষি প্রশিক্ষন ইনস্টিটিউট (এটিআই) । এর  নির্মান কাজে ব্যয় হবে ৪৯ কোটি টাকা। প্রয়োজন না থাকা সত্বেও এখানে নির্মাণ করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে মিলনায়তন। যেখানে কিছুদিন পূর্বে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তৈরী করা হয়েছে একটি ডিটোরিয়াম।

সবদিক বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ প্রধান, জননেত্রী শেখ হাসিনা  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গণ মানুষের নেতা, উন্নয়নের রুপকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম ওবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে মন্ত্রীত্ব প্রদান করবেন-এ আশায় ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী বুক বেধেছেন।






Shares