Main Menu

ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি!

+100%-
ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে প্রধান বিরোধীদল বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি। বিরোধীদলীয় নেত্রীর গুলশান কার্যালয়ের একাধিক সূত্র ঢাকাটাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই সূত্র জানায়- ত্যাগীদের অবমূল্যায়ন, জেলা ও মহানগর কমিটি গঠনে আর্থিক লেনদেন, কেন্দ্রীয় কমিটিতে জ্যৈষ্ঠ নেতাদের জুনিয়রদের নীচে পদ দেয়া, আন্দোলন সংগ্রামে চরম ব্যর্থতাসহ নানা অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে অবশেষে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে

জানা যায়, ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে অনেক নাটকীয়তার জন্ম হয়। ন্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্য ও কেন্দ্রীয় কয়েক প্রভাবশালী নেতা অনেকটা খালেদা জিয়ার প্রতি চাপ সৃষ্টি করে আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলকে সভাপতি ও হাবিবুর রশিদ হাবিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে। এরপর তারা ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।

তবে শীর্ষপদ ঘোষণার আগে নতুন কমিটির নেতারা খালেদা জিয়ার কাছে ওয়াদা করেছিলেন যেকোনো মূল্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবেন। নেতারা খালেদা জিয়াকে এমনও আশ্বাস দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একবার আন্দোলনের দাবানল ছড়াতে পারলে তা অতি দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে। তবে কমিটি ঘোষণার পরে আর সে পথে হাটেননি নতুন কমিটির নেতারা।

ব্যর্থতার কারণে শুরুতেই ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয় জুয়েলের কমিটি। এরপর বিবাদে জড়িয়ে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সঙ্গে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী না হওয়ায় শুরু থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উপেক্ষার চোখে দেখতে থাকেন তারা।

এমনকি কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে বেশিরভাগ পদই দেয়া হয় বিভিন্ন জেলা ও মহানগর থেকে। আর যার কারণে মনোবল ভেঙ্গে যায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। আবার অনেক ক্ষেত্রে সিনিয়রদের ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রদের অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়ায় অনেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল কমিটি ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রায় তিনমাস আগে কেন্দ্রের কাছে জমা দিলেও কেন্দ্রীয় দুই শীর্ষ নেতার খামখেয়ালীর কারণে তা আটকে আছে। বেশ কয়েকবার এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদের সাথে তর্কবিতর্ক হয় কেন্দ্রীয় কমিটির। বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি মহিদুল হাসান হিরুর বিরুদ্ধে ছড়ানো হয় অছাত্রের গুজব। আর সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে বলা হয় তিনি ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী। বিভিন্নভাবে প্রচেষ্টা চালানো হয় কমিটি ভাঙ্গার। সেই প্রচেষ্টা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

খালেদা জিয়ার কাছে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার কেন্দ্রীয় কমিটি চেষ্টা করেছেন বলেও জানা গেছে। তবে বিষয়গুলো ভালভাবে নেয়নি খালেদা জিয়া। কারণ ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায় ছাত্রদলের সাম্প্রতিক কর্মকা- ব্যাপক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।

এদিকে, ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালে ঢাকা মহানগরে একটা মিছিলও করতে পারেনি ছাত্রদল। খালেদা জিয়াকে বাসভবনে আটকে রাখার পরেও কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেনি ছাত্রদল। এমনকি যেকোনো কর্মসূচি ঘোষনা করলেই কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা তাদের মোবাইল বন্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান। তৃণমুল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জন্য দেয়া হয়না কোনো নির্দেশনাও। এ নিয়ে খালেদা জিয়া বর্তমানে চরম ক্ষুদ্ধ।

ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু জেলে থাকার পরেও ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির কোনো প্রতিক্রিয়া না থাকায় হতাশ হয়েছেন খালেদা। এ দিকে ছাত্র রাজনীতির মূল কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেনি ছাত্রদল। টুকু-আলিম কমিটির সময় কেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে অনেকবার চেষ্টা করেছিল ক্যাম্পাসে প্রবেশের।

কিন্তু বর্তমান কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিভক্তি জিইয়ে রেখে ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করছে নেতাকর্মীদের। ছাত্রদল সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা এখনও একটা মিছিল করতে পারেনি ক্যাম্পাসের আশপাশে।

গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলন সংগ্রাম সরাসরি মনিটরিং করছেন খালেদা জিয়া। বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ভুমিকা পর্যবেক্ষণ করছেন নিবিড়ভাবে। আর ছাত্রদলের ভুমিকায় তিনি চরমভাবে ক্ষুদ্ধ ও হতাশ।

এ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে দলের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাপ করেছেন বলেও জানায় সূত্রটি। তবে দলটির কয়েকজন আইনজীবী নেতা বিরোধীদলীয় নেত্রীকে পরামর্শ দিয়েছেন অন্তত আর একটি সপ্তাহ পর্যবেক্ষণের।

তবে গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, বিষযটি নিয়ে খালেদা জিয়া শিগগিরই দলটির মহাসচিব ও ছাত্রদলের সাবেক কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলবেন। এর পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।






Shares