Main Menu

সমাবেশে হেফাজতের হুশিয়ারী,৫ মে এর পর সরকার পতনের আন্দোলন

+100%-


মনিরুজ্জামান পলাশ
ও শামীম উন বাছির  : শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশে হেফাজত ইসলামের ঢাকা মহানগর আহবায়ক মাওলানা নুর হোসাইন কাশেমী বলেছেন, হেফাজতের ১৩ দফা ইসলাম এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৈমত্ব রার আন্দোলন। হেফাজত ইসলামের ১৩ দফা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৩ দফার ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা। বিভ্রান্ত করা হচ্ছে জনগনকে। নাস্তিকদের বিরুদ্ধে শাস্তির সর্বোচ্চ আইন ফাঁসির বিধান পাশ করার দাবী জানান তিনি।

বিশেষ অতিথি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, ৫-মের মধ্যে ১৩দফা দাবী না মানলে সরকার পতনের আন্দোলন। তিনি আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও মাহবুবুল আলম হানিফ’র  বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে ৮৫ কোটি টাকার লেনদেনের মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। যারা টাকা ছাড়া কিছুই বোঝে না। তারাই টাকার কথা বলেন। যারা টাকা চিনেন। তারা টাকার কথা বলেন। যারা আলেম ওলামাদের চিনেন। তারা আলেম ওলামাদের কথা বলেন।


সমাবেশে বক্তারা সরকারকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, শাহবাগ বন্ধ করা না হলে দেশে শান্তি আসবে না। শাহবাগ তিলে তিলে সরকারকে ডুবিয়ে দিচ্ছে। বক্তারা বলেন, আমরা নারীদের ঘরে বসিয়ে রাখতে চাই না। তাদের সম্মানজনক কাজে লাগাতে চাই। ইসলাম নারীদের যে অধিকার দিয়েছে আমরা সে অধিকার বাস্তবায়ন চাই।

 

ইসলামও নারীর কাজের বিরোধীতা করে না। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়ে বলেন, আগামী ৩৬ ঘন্টার মধ্যে তাকে মুক্তি না দেয়া হলে আরো কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে।

 

শহরের পৌর মুক্ত মঞ্চে শানে রেসালত মহাসমাবেশ জেলা হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা মনিরুজ্জামান সিরাজী সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী, মাওলানা মাঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলীপুরী, সিলেটের প্রতিনিধি শাইখুল হাদিস নিজাম উদ্দিন, হবিগঞ্জের প্রতিনিধি মাওলানা মাঈনুল, নরসিংদীর মাওলানা আমীর আলী, মুফতি মোবারক উল্লাহ, মুফতি রহমত উল্লাহ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, আশেকে এলাহী, মুফতি শামসুল হক, মাওলানা বেলায়েত উল্লাহ, মাওলানা আব্দুর রহিম কাশেমী, মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারী, মাওলানা মেরাজুল হক কাশেমী, মাওলানা বোরহান উদ্দিন, মাওলানা আজহারুল হক কাশেমী, মুফতি জাকারিয়া প্রমুখ।  

অহিদ মিয়ার ফিতা বিক্রি জমজমাট

অহিদ মিয়া ফেরিওয়ালা। তার ব্যবসা চাঙ্গা হয়েছে। হেফাজতের ইসলামের ব্রাহ্মণবাড়িয়া মহাসমাবেশে অহিদ মিয়া এসেছিলেন মাথার কাপড়ের ফিতা বিক্রি করতে। মাত্র ঘন্টা খানেকের মধ্যেই কমপে ৫শতাধিক ফিতা বিক্রি করে ফেলেন। তার সাথে এমন আরো ৪/৫জন বিক্রেতা এসব ফিতা বিক্রি করেন। ফিতাতে লেখা নারায়ে তাকবীর, আল্লাহ আকবার। নাস্তিক  ব্লগারদের ফাঁসি চাই। সাদা কাপড়ের নীল ও লাল রঙ্গের অংকিত এসব ফিতা মিছিলকারীদের কিনতে বেশ তৎপর দেখা যায়। অহিদ মিয়া জানান, প্রায় ফিতা বিক্রি করেই ৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে।
জামে মসজিদে কান্নার রোল
হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে।  জুম্মার নামাজের সাথে সাথে শহরের সবক’টি মসজিদে মুসল্লিদের ভীড় উপচে পড়ে। ঠিক ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রধান জামে মসজিদের খতিব মাওলানা বেলায়েত উল্লাহ খুৎবার প্রাক্কালে বয়ান করে। এসময় তিনি ইসলামের দৃষ্টিতে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) শান বর্ণনা করেন। সেই সাথে মোনাফেক ও নাস্তিকদের সাথে ইসলামের কি সম্পর্ক তার বিবরণ দেন। নামাজ শেষে তিনি বিশ্ব মুসলিমদের শান্তি কামনায় মোনাজাত করেন। বয়ান ও দোয়ায় তিনি বলেন, দেশ আজ দু’ভাগে বিভক্ত। একদিকে আল্লাহ ও আল্লাহ রাসুলের প অন্যদিকে বেঈমান ও নাস্তিকরা রয়েছে। বেঈমানদের কপালে হেদায়েত না থাকলে নমরূদ, ফেরাউন, সাজ্জাদ, হামানের মত বেঈমানদের পরিনতির দোয়া করেন। এসময় সারা মসজিদে কান্নার রোল পড়ে যায়।
শহরে তীব্র যানজট

দুপুর প্রায় ২টার মধ্যেই জন সমুদ্রে পরিনত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর মুক্ত মঞ্চ। জায়গা  না পেয়ে শত শত মানুষ পৌরসভা সড়ক, ফায়ার সার্ভিস সড়ক, তোফায়েল আজম মনুমেন্ট সড়ক, পুরাতন কোর্ট রোড সড়ক সহ বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয়। মানুষের ঠাসা ভীড়ে এসব সড়কে তিল ধারনের ঠাই ছিল না। এতে করে আইন শৃংখলায় রায় নিয়োজিত সদস্যরা প্রধান সড়ক বন্ধ করে দেয়। এতে খাল পাড় দিয়ে শহরের সকল যান চলাচল করে। ফলে কুমারশীল মোড়, খালপাড়, মহাদেব পট্টি, কেদাস মোড়, জগত বাজার, ডাঃ ফরিদুল হুদা সড়ক, কালাইশ্রীপাড়াসহ বিভিন্ন সড়কে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয়।

সাধারন মানুষের পক্ষ থেকে পানীয় ও খাবার

হেফাজত ইসলামের সমাবেশে যে যার মত পেরেছে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। সমাবেশের আগেই নাম প্রকাশে ইচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী বিপুল পরিমান শসা সরবরাহ করে। দুপুরে পানি, শরবত, শুকনো খাবার সরবরাহ করে সাধারন মানুষ। জেলা জাতীয় পার্টির নেতারা সমাবেশ সংলগ্ন এলাকায় ছাউনী তৈরি করে তৃষ্ণার্তদের পানি প্রদান করেন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন খাবার ধরনের ও পানি সরবরাহ করে।






Shares