Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অশ্রুসিক্ত প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক ইমতিয়াজ বুলবুল

+100%-

br 11-10-15
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুরাতন জেলা কারাগার পরিদর্শন করে অশ্রুসিক্ত হয়ে গেলেন দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। এ সময় ভীষণ আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন তিনি। গত শুক্রবার তিনি বিশিষ্ট গীতিকার গাজী তানবীর এর বিবাহত্তোর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসেন। এদিন বিকালে তিনি শহরের জেলরোডস্থ পুরাতন জেলা কারাগার পরিদর্শনে যান। মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি অনেকদিন এ কারাগারে কারান্তরীন ছিলেন তিনি। শহর দারোগা আবুল কাসেম তাকে স্বাগত জানান।
এ সময় তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে অক্টোবর মাসের ২ তারিখ তিনি আগরতলা থেকে খড়মপুর হয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের আখাউড়ার তন্তর এলাকায় পাকিস্থানী সৈন্যদের অবস্থান লক্ষ্য করতে আসেন। এক পর্যায়ে রাজাকার বাহিনীর মাধ্যমে পাকিস্থানী বাহিনীর হাতে আটক হন। এরপর তাকে পাক সৈন্যরা প্রথমে পিয়ারা মিয়ার টর্চার সেলে একদিন এবং পরে দানা মিয়ার টর্চার সেলে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করেন। এরপর তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি আরো জানান, এ সময়কালে জেলা কারাগারে তার সাথে আরো ৪৯ জন সেখানে ছিলো। এরপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই মুক্তিযোদ্ধাদের কারাগারের ভেতর থেকে বের করে নিয়ে বিভিন্ন টর্চার সেলে অকথ্য নির্যাতন করা হতো। রোজার মাসের ২৭ তারিখে পাকিস্তানী সৈন্যরা জেলা কারাগার থেকে এক সাথে ৪২ জনকে বের নিয়ে গিয়ে হত্যা করে পাক সৈন্যরা। এদিন ৪২ জনের কান্না ও জিকিরে প্রকম্পিত হয়ে উঠে কারাগার। তাদের সাথে কারাগারে থাকা অন্যদের কান্না ও জিকিরে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারনা হয় সেদিন। পরদিন আবারো এসে তাকেসহ কয়েকজনকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময় মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, মাহবুব, মানিক, খোকা জীবনের মায়া ত্যাগ করে সৈন্যদের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। এক সময়ে সৈন্যদের কাবু করে তারা কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এসব কথা বলতে গিয়ে অশ্রুসজল হয়ে উঠে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের দু’চোখ।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানী সৈন্যরা ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় শহীদ নজরুল একটি সিগারেটের টুকরো, শহীদ বাতেন লুঙ্গি, শহীদ শিরু মিয়া গায়ের চাদর আমাকে দিয়ে যান, আমি যেনো এসব বাড়িতে পৌছে দেই। তিনি আরো বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগার এলাকা থেকে পালিয়ে নদী পথে নৌকার মাঝি সেজে নৌকা চালিয়ে ঢাকায় পৌছে আবারো সদর ঘাটে পাকিস্তানীদের হাতে ধরা পড়ে যাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুরাতন কারাগার পরিদর্শনকালে সঙ্গীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সাথে ছিলেন তার একমাত্র সন্তান সামির ইমতিয়াজ, বিশিষ্ট গীতিকার জালাল মুন্না, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাংবাদিক সমিতির আহবায়ক দীপক চৌধুরী বাপ্পী, তিতাস আবৃত্তি সংগঠন পরিচালক মো. মনির হোসেন ও সঙ্গীতশিল্পি হৃদয় কামাল।






Shares