ব্রাহ্মনবারিয়া ঘাটুরার মাহাজনের ব্যতিক্রমী ‘পাখির অভয়াশ্রম’
প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মনবারিয়া সদর উপজেলার শহরতলি ইউনিয়নের সর্ব দক্ষিনের গ্রাম ঘাটুরা। আর এই গ্রামের একজন নিরলস উদীয়মান সাংবাদিক আজম রাজুর বসবাস স্থল হল এই ঘাটুরা গ্রাম। মাত্র এক মাসের প্রচেষ্টাতে রাজু ও হৃদয় মাহাজন নামের দুই যুবক বন্য পাখির অভ্যয়াশ্রমে পরিণত করেতে যাচ্ছে। আর তাদের সাথে যোগ দিয়েছেন আরও কিছু পরিশ্রমিক যুবক তারা হল, জীবন মাহাজন, মাসুদ মাহাজন, শাজাহান মাহাজন, বাবু মাহাজন, সবুজ মাহাজন, জাবেদ,আলমগীর,অলি মিয়াসহ আরও অনেকেই।
১ নং গ্যাস ফিল্ড সংলগ্ন ছোট্ট একটি মহল্লা ঘাটুরা মহাজন বাড়ি। আর এই অভ্যয়াশ্রমের কাজের জন্য পুরো এলাকায় মুক্তভাবে বসবাস করা শুরু করতেছে বন্য পাখিরা। প্রথমে অনেকে এই উদ্যোগেকে তিরস্কার করলেও বর্তমানে মাহাজন বাড়ির এই যুবকদের এমন উদ্যোগের সঙ্গে ধীরে ধীরে একমত হতে যাচ্ছে গ্রামবাসীরাও এই কাজের জন্য বাড়িয়ে দিতেছে সহযোগিতার হাত।
রাজু মাহাজন আর হৃদয় মাহাজন এ পর্যন্ত মহল্লার প্রায় ৩০ টি বৃক্ষে বিশেষভাবে তৈরি পাখির বাসযোগ্য ১২০টি মাটির কলস বেঁধে দিয়েছে। তাদের পরবর্তী টার্গেট গ্রামের প্রতিটি মহল্লার সব গাছে এখন মাটির কলস বাধার আওতায় আনা হবে। পাখির আশ্রয়ের উপর নির্ভর করে পুরো এলাকার গাছেই মাটির কলস লাগানো হবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী ৬ মাসের মধ্যে পুরো এলাকা জুরেই বন্য পাখির অভ্য়াশ্রমে পরিণত করা হবে।
পাখির বাসযোগ্য বৃক্ষ নিধন, উপযুক্ত খাদ্য সংকট, ক্ষেতেখামারে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার, প্রাকৃতিক দুরারোগ্য, অপরিকল্পিত পাকা দালানকোঠা নির্মাণ ও শিকারীদের তান্ডবে এ অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির বন্য পাখির সংখ্যা হ্রাস নজরে আসে মাহাজন বাড়ির এই দুই যুবকের। তারপর তারা নিজ উদ্যোগে বন্য পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলার ব্যতিক্রমী এ কার্যক্রম শুরু করে।
উদ্যোক্তা সাংবাদি আজম রাজু বলেন, এখন থেকেই বন্যপাখিদের প্রতি যতœবান না হলে ভবিষ্যতে পরিবেশ বান্ধব দেশীয় অনেক প্রজাতির পাখিই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইতিমধ্যেই আমাদের দেশ থেকে প্রায় ৩৫ প্রজাতির দেশীয় পাখি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
সাংবাদিক আজম রাজু জানান, পাখিরাই আমাদের প্রকৃত বন্ধু। এরাই আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বেঁচে থাকলে আমরাও সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকবো। পৃথিবীও বেচে থাকবে যুগ যুগ। এ ভাবনা থেকেই প্রথমে সাংবাদিক আজম রাজু তার নিজ বাড়ি মাহাজন বাড়ির গাছে প্রথমে দশটি মাটির কলস বাঁধেন। কিছুদিন যেতেই এসব কলসে আশ্রয় নেয় শালিক পাখি। এরপর থেকেই পুরো মাহাজন বাড়ির আশে পাশে এলাকাতে শুরু করা হয় গাছে গাছে মাটির কলস লাগানোর কাজ।