Main Menu

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের উদারতার মহৎ দৃষ্টান্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু পরিবারের হাবিবার জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে “টক অব দ্য টাউন”

+100%-
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিশু পরিবারের সন্তান অনাথ হাবিবার সুখবর! ১৪ জুলাই হাবিবার বিয়ে। দাওয়াত দেয়া হচ্ছে এখানকার মন্ত্রী, এমপি থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষকে। বেশ জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করা হচ্ছে। হাবিবা ‘উঁচুতলার’ কোনো মেয়ে নয়।
হাবিবা ‘অনাথ’। তার বাবা-মা কেউ নেই। তাকে নিয়ে এই আয়োজন এখন পুরো জেলা ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়েছে। তবে এই বিয়ের পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তার এই শুভ উদ্যোগের কারণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন ‘অনাথ’ হাবিব। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছর দশের আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি শিশু পরিবারে ঠাঁই হয় বাবা-মাহীন হাবিবার। শিশু পরিবারের শেকড়ের টান ছিন্ন করতে চায়নি সে। হাবিবার জন্য ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকে। বর খুঁজে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। কয়েক মাস আগে হাবিবার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়। নীতিমালা অনুসারে তাকে ছাড়তে হবে শিশু পরিবার। ডাকা হল হাবিবার মামা-মামিকে। কিন্তু সে যাবে না মামা-মামির সঙ্গে। তাই শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্বাবধায়ক রওশন আরার ওড়না ধরে আছে হাবিবা। পেছন ফিরে রওশানা অবাক।
পরিচালনা কমিটির কাছ থেকে সিদ্ধান্ত এলো, হাবিবা আপাতত শিশু পরিবারেই থাকবে। তাকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করা হবে। হাবিবার পুনর্বাসনে নানা ধরনের চিন্তা মাথায় আসতে থাকে রওশন আরার। হাবিবার বিয়ে নিয়ে চিন্তা করতে থাকলেন। কথা বললেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে। ভালো ছেলের সন্ধান পেলে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন কিনা এমন কথায় পুলিশ সুপার ইতিবাচক সাড়া দিলেন। হাবিবার পাত্রের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কনস্টেবল পদে এবার চাকরির ব্যবস্থা করলেন পুলিশ সুপার। পরে পুলিশ সুপার বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব নেন।
এগিয়ে আসেন শিশু ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার। তিনি বলেন, ‘হাবিবার বিয়েটি যেন সমাজে দৃষ্টান্ত হয়। সমাজের ধনী ব্যক্তিরা যেন হাবিবার মতো অনাথ মেয়েদের বিয়েতে এগিয়ে আসেন। এই বিয়ে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে।”
হাবিবার বিয়ে নিয়ে তারা কথা বলেন মন্ত্রী, এমপিসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সঙ্গে। বিয়ের কাজে যুক্ত হন সমাজসেবা অধিদফতর ও সরকারি শিশু পরিবার সংশ্লিষ্টরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্তি পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘আলোচিত এই বিয়েতে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান পিপিএম স্যার ও শিশু পরিবারের জন্য নিবেদিত জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার। আগামী ১৩ জুলাই শিশু পরিবারে হাবিবার গয়ে হলুদ অনুষ্ঠান হবে। এতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। পরের দিন ১৪ জুলাই দুপুরে শিশু পরিবারে বর-যাত্রী আগমনের পর দুপুর সাড়ে ১২টায় বিয়ে পড়ানো হবে। জুম্মার নামাজের পর শুরু হবে খাওয়া-দাওয়া। বিকেলে নব-দম্পতিসহ বর পক্ষের অতিথিরা পুলিশ সুপারের বাসভবন থেকে আপ্যায়ন শেষে হাবিবার শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ আয়োজক সূত্রে জানা গেছে এই বিয়েতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক হাবিবাকে দেবেন এক সেট গহনা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সাংসদ র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী নব-দম্পতি থাকার জন্য বরের বাড়িতে ঘর নির্মাণ করে দেবেন। জেলা প্রশাসক রেজওয়ানুর রহমান উপহার দিবেন সোনার চেইন, বিয়ের শেরোয়ানী, পাগড়ী, নাগরা ও রঙ্গিন টেলিভিশন। পুলিশ সুপারের সহধর্মিনী দেবেন বিয়ের শাড়ী ও গহনা। জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের পক্ষ থেকে হাবিবার বিয়েতে উপহার দেওয়া হবে স্টিলের আলমারি এবং সরকারি শিশু পরিবারের তত্বাবধায়ক রওশন আরা হাবিবাকে দেবেন সেলাই মেশিন।





Shares