Main Menu

জানুয়ারিতে আমন্ত্রণ ঢাকায়

রোহিঙ্গা শিবিরে যেতে চান প্রণব

+100%-

আনন্দবাজার :: রাষ্ট্রপতি পদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরে মূলত পড়াশুনো আর ডায়েরি লিখেই কাটিয়েছেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। কদাচিৎ ১০ রাজাজি মার্গের বাসস্থান থেকে বেরিয়েছেন কোনও অনুষ্ঠানে। দেশের বাইরে সফরের প্রশ্নে প্রথমেই বাংলাদেশকে বেছে নিতে চলেছেন তিনি। সূত্রের খবর, জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে ঢাকা যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। ওই সফরেই সে দেশের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরেও যেতে ইচ্ছুক তিনি।

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এই মুহূর্তে তপ্ত বাংলাদেশ। পাশাপাশি রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা-সহ আন্তর্জাতিক মহলেরও চাপ বাড়ছে উৎখাত হওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর। ভারতও ৪০ হাজার শরণার্থীকে ফেরত পাঠাতে দৌত্য চালিয়ে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মত বর্ষীয়ান এবং রাষ্ট্রনীতিতে অভিজ্ঞ এক নেতার রোহিঙ্গা শিবির দেখতে চাওয়াটা কূটনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকাকালীন বরাবরই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি ছিলেন প্রধান সূত্রধর। সূত্রের খবর, প্রণবের আসন্ন সফরের বিষয়টি নিয়ে ভারত এবং বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কথা বলা হবে। নিরাপত্তার খুঁটিনাটি বিবেচনা করা হবে। বাংলাদেশেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। ফলে এই সফর নিয়ে কোনও জটিলতা তৈরি হোক, সেটা প্রণববাবু নিজেও চান না। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, শিবিরের ভিতরে যদি যাওয়ার সুযোগ না হয়, তবে এলাকাটি অন্তত ঘুরে আসতে চান তিনি।

কিছু দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেখা করেছেন প্রণববাবুর সঙ্গে। রাষ্ট্রপতি থাকার সময়েও মোদী নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তাঁর সঙ্গে। মূলত দু’টি বিষয়ে পরামর্শ নিতেন মোদী। সংসদীয় কার্যকলাপ এবং বিদেশনীতি। জানা গিয়েছে সেই ট্রাডিশন এখনও চলেছে! তবে সংসদ নয়, মোদীর এখন প্রয়োজন প্রণবের রাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা এবং পরামর্শ। জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক আলাপচারিতায় মোদী তাঁর সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক সমস্যার দিকগুলি নিয়ে কথা বলেছেন। বিশেষ করে তাঁর উদ্বেগের জায়গা রোহিঙ্গা সমস্যা। প্রণববাবুর পরামর্শ, বিষয়টি নিয়ে মায়ানমারের উপরে কূটনৈতিক ভাবে যতটা সম্ভব চাপ তৈরি করা হোক। কিন্তু শরণার্থীরা যত দিন ভারতে আছেন, জীবনধরণের ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধাগুলি যেন তাঁদের দেওয়া হয়। তবে রোহিঙ্গাদের শেষ পর্যন্ত মায়নমার আদৌ ফেরত নেবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান প্রণব।

ভারতে আসা ৪০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী সংখ্যার দিক থেকে ভারতের কাছে এমন কিছু বড় চাপ নয়। কিন্তু বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যাটি বিপুল। এবং সেটাই সাউথ ব্লকের মাথাব্যথা। নয়াদিল্লির আশঙ্কা, বাংলাদেশ ও মায়ানমার দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যদি কাজ হয়, আউং সান সু চি-র দেশ যদি যদি শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের কিছু অংশকে ফেরত নিতে রাজিও হয়, তা হলেও তাঁরা সে দেশে ফিরবেন কি না সন্দেহ রয়েছে। সাউথ ব্লকের এক কর্তার আশঙ্কা, ‘‘(রোহিঙ্গারা) রওনা হয়তো দেবেন বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারের উদ্দেশে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়তি অনুপ্রবেশ ঘটতে থাকবে।’’ রোহিঙ্গা প্রশ্নে তাই বাংলাদেশকে পাশে রেখেই এগোনোরই পক্ষপাতী এ দেশের কূটনীতিকদের বড় অংশ। প্রণববাবু মতো বিদেশনীতিতে অভিজ্ঞ ব্যক্তি বাংলাদেশ সফর এই ক্ষেত্রে নতুন কী মাত্রা যোগ করতে পারে, সেটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে সাউথ ব্লককে।






Shares